জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আজ রোববার সংস্কারের বিষয়ে মতামত জানাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। তাদের মতামতে ভোট দেয়ার বয়স ১৬ বছর আর নির্বাচনে প্রার্থীর বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দলটি। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর রুপায়ন সেন্টারে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার সুপারিশমালা জমা দেয়া হবে। সেখানে ভোট দেয়ার বয়স ১৬ বছর এবং নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২৩ বছর করার প্রস্তাব করবে এনসিপি। এছাড়া বাহাত্তরের সংবিধান অভ্যুত্থানের পরে আর কার্যকর নয় এজন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন সংবিধান লেখা উচিত।

সারোয়ার তুষার বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে এমনটা রয়েছে। ১৬ বছর বয়সে ভোট দিতে পারছেন। এর কারণ হচ্ছে এবারের আন্দোলনে প্রায় সারা বিশ্বে এটাকে জেন–জির অভ্যুত্থান হিসেবে বলা হচ্ছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী যে বাংলাদেশ এবং আসন্ন যে নির্বাচন, এ নির্বাচনে তারা (জেন–জি) মতামত দিতে পারবে না শুধু বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ার কারণে, এটা এনসিপি যৌক্তিক মনে করে না।

সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ার তুষার বলেন, তারা (সংবিধান সংস্কার কমিশন) চায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর। এনসিপি মনে করে, এটা খুবই কম বয়স। এটা ২৩ বছর হতে পারে। বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স ২৫ বছর। সেখান থেকে কমিয়ে অর্ন্তর্বতী সরকারের কাছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ২১ বছর করার প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। এখানে ২৩ বছর করার প্রস্তাব করা হবে।

রোববার বেলা দুইটার সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কাছে এনসিপির প্রতিনিধিদল সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে বলেও জানান সারোয়ার তুষার। তিনি জানান, তারপর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির আলোচনা হবে। ঐকমত্য কমিশন ইতিমধ্যে বলেছে, যে দলগুলো ইতিমধ্যে সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে, তাদের সঙ্গে তারা আলোচনা শুরু করেছে। রোববার প্রস্তাব জমা দিলে এনসিপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ঈদের পর তাদের (এনসিপি) অবস্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, শুরু থেকে বলে এসেছি আমরা একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান চাই। সেটা করার জন্য আমরা সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি মনে করি গণপরিষদ নির্বাচন। সেক্ষেত্রে আমরা বলেছি গণপরিষদ নির্বাচন যদি না হয় তাহলে গণপরিষদ এবং আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদ হতে হবে। এমন একটা আইনসভা গণপরিষদের ভূমিকায় থাকবে। এ বিষয়ে আমরা রোববার কথা বলবো। সারোয়ার তুষার বলেন, পুলিশ সংস্কার কমিশন এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের স্প্রেডশিট আমাদের কাছে কেন পাঠানো হলো না! বাহাত্তরের সংবিধান অভ্যুত্থানের পরে আর কার্যকর নয়। যদিও প্রশ্ন আসে যে এই সরকার তো সংবিধানের মধ্য দিয়ে শপথ নিয়েছে। এটা একটা টেকনিক্যাল ব্যাপার। আমরা মনে করি গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন সংবিধান লেখা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সংস্কার সমন্বয় কমিটির সদস্য মনিরা শারমিন, জাবেদ রাসিন, যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এবং কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন।