বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে সৎ ও যোগ্য লোকের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে একটি জনকল্যাণমুখী স্বনির্ভর আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট আর বি কনভেনশন হলে এক শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা শিবিরে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সমাজ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, সমাজ পরিবর্তন করতে হলে শুধু স্লোগানে হবে না। আমাদের সোসাইটিকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হবে। এজন্য আরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিবারগুলোকে ইসলামী মূল্যবোধে গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সমাজের প্রতিটি স্তরে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি সুসংগঠিত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ নতুন নেতৃত্ব পাবে। নারীর মর্যাদা নিয়ে যেসব আশঙ্কা রয়েছে তা দূর করে তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি, আল্লাহ যদি জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় নেন তাহলে নারীর মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সমালোচনা করে ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, শেখ হাসিনা তার পিতার বাকশাল নীতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন, যা দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট কার্যকর হয়নি। তিনি আরও বলেন, জামায়াত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং দেশের রাজনৈতিক সংস্কারে গতি আনতে চায়।

ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, আমাদের আদর্শ একমাত্র ইসলাম। সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষা শিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, মোয়ামেলাতের ক্ষেত্র শুধু লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। হক দুই ধরনের। এক. আল্লাহর হক, দুই. বান্দার হক। এই দুটি মোয়ামেলাতের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশ্বাস এবং শৃঙ্খলার মাধ্যম মানবজাতির উন্নয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ইবাদত দিয়ে আল্লাহর হক আদায় হবে না। খেলাফতের দায়িত্ব পালন অনেক কঠিন। নামায, রোজা, যাকাত আদায়ের মাধ্যমে খেলাফত প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি নিতে হবে। হয় গাজী না হয় শহিদ, এই ধরনের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মহানগরী জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, সংগঠনের সকল নেতাকর্মীদেরকে সর্বাস্থায় আনুগত্য ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। শিক্ষা শিবিরে দারসুল কুরআন পেশ করেন অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় শিক্ষা শিবিরে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, চট্টগ্রাম-১১ আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শফিউল আলম, কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোছাইন, অধ্যাপক মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোছাইন, ফখরে জাহান সিরাজী, মুহাম্মদ ইসমাইল, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমি প্রমুখ।