বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী) এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের ঘুম হারাম হয়ে যাবে”। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজরা ক্ষমতায় আসলে ব্যবসায়ীদের ঘুম হারাম হবে, মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা আর অগ্রযাত্রা দেখে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজরা এখন নানারকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করতে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের ভূমিকায় আর্বিভূত হচ্ছে। তবে যতই ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত করা হোক না কেন জামায়াতে ইসলামী নিঃশেষ করা যাবে না। কারণ জামায়াতে ইসলামী দেশ ও জাতির কল্যাণে রাজনীতি করে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার জন্য নোংরা রাজনীতি করেনি, করবেও না। জামায়াতে ইসলামী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদেশে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ করতে চায়। যারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা চায় না তারাই জামায়াতে ইসলামীর বিরোধীতা করে। কারণ ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা হলে তারা চাঁদাবাজি করতে পারবে না, সন্ত্রাসী করতে পারবে না, মাদক কারবারি করতে পারবে না, অস্ত্রবাজি করতে পারবে না, মানুষের সম্পদ লুট করতে পারবে না। শনিবার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রমনা থানা কর্তৃক আয়োজিত কর্মজীবি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অতীতে সব দল দেখা শেষ এবার নতুন বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত মানবিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে দেখতে হবে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব মুক্ত করে এক সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করবে। যারা ৫ বছর ক্ষমতায় থেকে প্রতিবছর দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে তাদের নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হতে পারে না। এরা আবার ক্ষমতায় বসতে পারলে দেশকে দেউলিয়া করে দিবে। যাদের অতীত ইতিহাস দুর্নীতি, সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজ তারা আগামীতে আরও ভয়ঙ্কর ভাবে জাতির ঘাড়ে চেপে বসবে। তাই এদের সুযোগ দেওয়া যাবে না। এদের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায়, গ্রাম-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, শহর-বন্দরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ৫ আগস্ট পরবর্তী এদের দলীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজি সন্ত্রাসীদের পুরো জাতি অতিষ্ঠ।
ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যত্যয় করে স্থানীয়দের জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক শহর উপহার দেওয়াই জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার।
তিনি আরও বলেন, অতীতে যারা এমপি হয়ে ঢাকা-৮ আসনের জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, ব্যাংক-বীমার মালিক হয়েছে, নিজ নামে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা বাণিজ্য করেছে তাদেরকে আর ভোট দেওয়া যায় না। এরা আবারো সুযোগ পেলে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলবে। জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজের স্থান নেই। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। জামায়াতে ইসলামীকে পরীক্ষামূলক একবার নির্বাচিত করা আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার, জাতি পাবে নিরাপদ এক কল্যাণ রাষ্ট্র। জুলাইয়ের শহীদদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন দিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগরীর সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন বলেন, আগামীর বাংলাদেশ ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ। আজকের সমাবেশে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি প্রমাণ করে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি ব্যবসায়ী সমাজের সমর্থন। তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরে আমাদের আমীরে জামায়াত, সেক্রেটারী জেনারেল, বিশ্ববরণ্য আলেম আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ আমাদের শীর্ষ ১১ নেতৃবৃন্দকে নির্মম, নিষ্ঠুরভাবে শহীদ করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্যা ভাইদেরকে খুন-গুম করা হয়েছে। এখনো গুম হওয়া বহু মায়ের সন্তানের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এতোকিছুর পরও আমরা হারিয়ে যাইনি, আমরা আপনাদের মাঝেই ছিলাম। আমরা প্রকাশ্যে কার্যক্রম চালাতে না পারলেও ভিন্ন কৌশলে মানবিক সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সিদ্ধেশরী মন্দিরসহ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রয়োজনীয় মানবিক সহযোগিতা আমরা অতীতেও করেছি। আমরা বিশ্বাস করি মানুষ হিসেবে সকলের অধিকার সমান। আমীরের জামায়াতের ঘোষণা, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের অভিন্ন পরিচয় তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা কাউকে সংখ্যালঘু বলি না। সুতারাং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে প্রত্যেকটি মানুষের প্রকৃত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আর এটির নামই ইনসাফ। জামায়াতে ইসলামী ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চায়। এজন্য দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে তিনি স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো. ফারুক হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রীতি সমাবেশে রমনা থানা জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সহস্রাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।