বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান স্পষ্টভাবেই বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি হবে না সেটা তো বিএনপির বক্তব্যের বিষয় নয়। এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনার’ কাছে জাতীয় নাগরিক পার্টির উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এই কথা বলেন।
আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কি হবে না তা বিএনপি নয়, জনগণ ঠিক করবে। যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা বলছে তারা তাদের বক্তব্যে বলেছে। কাজেই বিএনপি হিসেবে তো আমরা এই সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক নই। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে বলেছেন, জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয় এটা। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে কি না করবে। এটা হচ্ছে আমাদের বক্তব্য।
নিজের যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, আসলে আমি নিজেরও একটি বক্তব্য যোগ করতে চাই, সেটা হচ্ছে, আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না বা তাদেরকে গ্রহণ করা হবে কি হবে না বা তাদের নিষিদ্ধ করা হবে কি হবে না। আমি যদি বলি এই প্রশ্নটা আওয়ামী লীগকে কেনো জিজ্ঞাসা করেন না। তারা কি আসলেই নির্বাচন করতে চায়, তারা কি আসলেই গণতন্ত্র চায়? সেটা তো আওয়ামী লীগকে বলতে হবে।
আওয়ামী লীগ আজকে পর্যন্ত নয় মাস চলে গিয়েছে একজন আওয়ামী লীগারকে আজকে পর্যন্ত দেখাতে পারবেন যে, তারা বলেছে, তারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এদেশের মানুষের ওপরে জুলুম করেছে, ফ্যাসিস্ট কায়দায় এদেশকে তচনচ করে দিয়েছে, লুটপাট করে নিয়েছে, তারা ভুল করেছে, তারা ক্ষমা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। তারা আজকে বাংলাদেশের মানুষের মতামত নিয়ে নির্বাচন করতে চায়, আওয়ামী লীগের একটি লোকও কী তা বলেছে? তিনি বলেন, বলেনি তো। কাজেই প্রশ্নটি আসলে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করার কোনো প্রয়োজন নেই। এর উত্তর বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ জানে।
গতকাল শুক্রবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কার্টার সেন্টারের একটি প্রতিনিধি দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে মহাসচিবের সাথে ড. আবদুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ছিলেন। কার্টার সেন্টারের ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জোনাথন স্টোনস্ট্রিট ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
ঘন্টাব্যাপী বৈঠকের পর মঈন খান সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের বিষযবস্ত তুলে ধরার পর আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধে জাতীয় নাগরিক পার্টির দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় মঈন খানকে।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে তারা হয়ত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতেও আসতে পারে।
মঈন খান বলেন, এরশাদের পতনের পর এখনকার অন্তর্বর্তী সরকারের মতো একটি সরকার গঠন করা হয়েছিল। সেই সময়কার সরকার তিন মাসের মধ্যে দেশবাসীকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিল। আজকে সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো সমালোচনা করে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে গেলে তার জন্য অনির্দিষ্ট সময় পিছিয়ে নিতে হবে তার কোনো যুক্তিযুক্ততা নেই।