বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দিনাজপুর জেলা জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মরণকালের বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠ প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন। দিনাজপুর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের টীম সদস্য, জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও চিরিরবন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আফতাব উদ্দীন মোল্লা, সাবেক জেলা আমীর আনোয়ারুল ইসলাম। দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মোঃ সাইদুল ইসলাম সৈকত, বিরল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম আফজালুল আনাম, জেলা জামায়াত নেতা এ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ভুট্টো, এ্যাড. মাইনুল আলম, জামায়াত নেতা আনোয়ার হোসেন, দিনাজপুর শহর জামায়াতের আমীর সাবেক ছাত্রনেতা সিরাজুস সালেহীন, দিনাজপুর শহর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুশফিকুর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, জেলা উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোঃ রাসেল রানা, দক্ষিণ জেলা সভাপতি সাজেদুর রহমান সাজু, অমুসলিম প্রতিনিধি শ্রী নির্মল চন্দ্র সাহা প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্তর্র্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আজ ৬ মাস ১০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে এই প্রথম আজ জামায়াতে ইসলামী রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পর দেশবাসী আশা করেছিল তারা সকল প্রকার জুলুম নির্যাতন থেকে রেহাই পাবে। যারা মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক ছিলেন তারা মুক্তি পাবে। কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর ফাঁসির আসামীসহ অনেকেই মুক্তি পেলেও জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাননি। তার মুক্তি না হওয়ায় দেশবাসী বিস্মিত ও হতবাক। বক্তারা আরো বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও দেয়া হয়নি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সালে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করার পর নিজ বাসায় অবস্থানকালে পুলিশ তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। পরবর্তীতে তৎকালীন দখলদার সরকার দলীয় লোকদের দ্বারা তাঁর বিরূদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো সাক্ষ্য প্রদান করে অন্যায়ভাবে সাজা প্রদান করা হয়। আজহারুল ইসলাম বরাবরই ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হন। এ অবস্থায় এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। সমাবেশ শেষে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠ হতে স্মরণকালের এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় ইনস্টিটিউট মাঠে এসে শেষ হয়। মিছিলে জেলার বিভিন্ন স্থান হতে আগত প্রায় ৭০-৮০ হাজার নেতা-কর্মী ও ছাত্র-জনতা অংশ নেন।