বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলকে আওয়ামী লীগের মিছিল হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিও ‘মিথ্যা’ বলে শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।

বাংলাদেশে গুজব ও ভুয়া খবর প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাধীন ফ্যাক্ট চেকিং সত্তা ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। এটি লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়, সম্প্রতি ঢাকার শাহবাগ এলাকার একটি মিছিলের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হয় এটি আওয়ামী লীগের।

ভিডিওটির ক্যাপশনে ‘১৪.০৯.২০২৫’ তারিখ উল্লেখ করে বলা হয়, আওয়ামী লীগের জোয়ার রাজপথে বাড়ছে।

কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের যাচাইয়ে দেখা যায়, ভিডিওটি আসলে গত বছর জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের।

ভিডিওটির বিভিন্ন কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চে পাওয়া যায় ২০২৪ সালের ১১ জুলাইয়ের একটি ফেসবুক পোস্ট।

ওই পোস্টে থাকা স্থিরচিত্রগুলোর একটিতে শাহবাগ ফ্লাইওভারের পিলারের পাশে সাদা শার্ট পরা এক ব্যক্তিকে দেখা যায়। ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওটির ৪ সেকেন্ডে তাকেও দেখা যায়।

পোস্টটিতে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে শিক্ষার্থীদের শাহবাগ দখলের এই ভিডিও ইতিহাস হয়ে থাকবে, কোটা সংস্কার আন্দোলন, ১১.০৭.২০২৪।’ ভিডিওতে বৈষম্যবিরোধী স্লোগানও শোনা যায়।

ফ্যাক্টওয়াচ আরও জানায়, ফেসবুক পোস্টের তারিখ ও ক্যাপশন অনুসরণ করে মূলধারার সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। একুশে টিভি ২০২৪ সালের ১১ জুলাই প্রচারিত এক প্রতিবেদনে জানায়, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে।

একইদিন প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিকেল ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা পুলিশের বাধা পেরিয়ে শাহবাগে পৌঁছায়। উভয় প্রতিবেদনের ভিডিও ও ছবির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

অনুসন্ধানে স্পষ্ট হয় যে আলোচিত ভিডিওটি আওয়ামী লীগের মিছিল নয়। এটি ২০২৪ সালের ১১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। ফলে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলো ‘মিথ্যা’ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।

ফ্যাক্টওয়াচ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও, খবর ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। এসব ক্ষেত্রে ফ্যাক্ট চেক করে সত্য তথ্য প্রকাশ ও গুজব প্রতিরোধে তারা কাজ করে যাচ্ছে।