রংপুরে বদরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে লাবলু মিয়া নামে একজন নিহত এবং সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার শহীদ মিনারের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিকেলে লাবলু মিয়া (৪৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ সময় জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থক মোন্নাফ (৬০), উপজেলার কাঁচাবাড়ি এলাকার মিতু মিয়া (৪০) একই এলাকার মৃত আফসার আলী ছেলে শফিকুল (৫৫), মধুপুর কালজানি এলাকার লাবলু মিয়া (৪৫) কাঁচাবাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে জয়নাল (২৫), মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মুন্না ও মংলু গুরুতর আহত হলে তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনার ছবি তুলতে গেলে গ্লোবাল টেলিভিশনের রংপুর জেলা প্রতিনিধি নুরুন্নবী নুরু, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফুয়াদ হোসেন বাংলাভিশনের ক্যামেরা পার্সন সাইফুল ইসলাম মুকুলসহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেন মোহাম্মদ আলী সরকারের সমর্থকরা।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার সাংবাদিকদের জানান, কে বা কারা কার দোকানে হামলা ভাঙচুর করেছে এই বিষয়ে নিয়ে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বক্তব্য দিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার লোকজনকে আহত করেছে।

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কালুপাড়াা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক সাংবাদিকদের জানান, গত পরশুদিন বিনা কারণে বদরগঞ্জের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী জাইদুল হকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন হামলা ও লুটপাট চালিয়ে ভাঙচুর করে। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহানসহ আমরা বাধা দিতে গেলে মোহাম্মদ আলীর লোকজন আমাদের উপর হামলা চালায়। ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদে আজকে সকল ব্যবসায়ী মানববন্ধনের আয়োজন করে। এ সময় মোহাম্মদ আলী সরকারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের ১০/১২ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য সচিব কমল লোহানি জানান, এটা দলীয় কোনো দ্বন্দ্ব নয়। মোহাম্মদ আলী সরকার ও মানিক চেয়ারম্যান এর পূর্বে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। তারই প্রতিফলন আজকের এই সংঘর্ষ। বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম আতিক জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছ।

এই সংঘর্ষে পর বিএনপির ওই দুই নেতাসহ বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবীর মানিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু। এ বিষয়ে যৌথবাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী জানান, বদরগঞ্জ থানার সাথে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।