দাউদকান্দি (কুমিল্লা) সংবাদদাতা: দাউদকান্দিতে আলোচিত রিফাত হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে। গত ২৪ জুলাই কুমিল্লায় এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর কাছে রিফাতের মা অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলে নিহত হওয়ার পর আমি নিজেই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু এর আগেই রাজ্জাক মেম্বার নিজেই বাদী হয়ে মামলা করে ফেলেছে।” তার সাথে আমাদের কখনোই কোন পরিচয় ছিল না।

রিফাতের মায়ের আরও অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে যে, মামলাটিকে কেন্দ্র করে দাউদকান্দির কিছু নেতা বিশেষ করে রাজ্জাক মেম্বারসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা এই মামলাকে “ শোকের ব্যবসা” বানিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্যে জড়িয়েছেন।

এ প্রেক্ষিতে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে দাউদকান্দির সুন্দলপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদল সভাপতি ও মামলার বর্তমান বাদী রাজ্জাক মেম্বারকে ফোন করে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেন। ফোনালাপে তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “একটি শহীদের রক্ত নিয়ে কেউ ব্যবসা করলে সেটা দলের নয়, জাতিরও কলঙ্ক। ১ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লায় এসে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিন।” হাসনাতের এমন অবস্থান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

রাজ্জাক মেম্বার এই মুহূর্তে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য না দিলেও তার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, তিনি ‘নির্দিষ্ট অভিযোগের’ ভিত্তিতে মামলার দায় নিয়েছেন এবং সেটি রাজনৈতিকভাবে নয়, মানবিকভাবে করেছেন বলে দাবি করেছেন। এদিকে ঘটনার পরপরই দাউদকান্দি উপজেলার সর্বস্তরের ছাত্র, তরুণ ও যুবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনাকে “মামলা বাণিজ্য” হিসেবে আখ্যায়িত করছেন এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ‘নৈতিক বিচ্যুতি’র অভিযোগে অভিযুক্ত করছেন।

দাউদকান্দির ফেসবুক, বিভিন্ন স্থানীয় গ্রুপ ও পেজে শত শত পোস্ট, লাইভ এবং প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। একাংশ বলছে, শহীদ রিফাতের নাম ব্যবহার করে যদি সত্যিই কেউ অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়, তবে তা শুধু রাজনৈতিক শূন্যতা নয়, বরং নৈতিক দেউলিয়াত্ব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ইস্যু কেবল একটি মামলার আইনি গতিপথ নয়এটি দাউদকান্দির রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার এক জ্বলন্ত প্রতিফলন। মামলার বাদী নিয়ে বিভ্রান্তি এবং বাণিজ্যের অভিযোগ একদিকে বিএনপিকে চাপে ফেলছে, অপরদিকে শহীদ রিফাতের পরিবার ও সাধারণ জনগণের মধ্যে তৈরি করছে অসন্তোষ ও অবিশ্বাস।

প্রসঙ্গত, রাজ্জাক মেম্বার দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি এবং বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। আর শহীদ রিফাত ছিলেন দাউদকান্দির জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় এক সাহসী তরুণ, যার মৃত্যু দাউদকান্দিতে রাজনৈতিক নতুন ধারা সৃষ্টি করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, রিফাত হত্যা যেমন রিফাতের পরিবার এর কেউ করে নাই,করেছে রেজেক মেম্বার তেমনি শহীদ বাবু হত্যার মামলাও বাবুর পরিবার করতে পারেনি,মামলা করেছে ছাত্রদলের পৌরসভা সাধারণ সম্পাদক পাভেল আহমেদ। পরে ওনি বলেন,আমাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে শহীদ বাবু হত্যার আসামি করেছে একদল টাকালোভী পিশাচ নামের রাজনীতিবিদ। আমি অনেকদিন জেলও খেটেছি এই মামলায় অবশ্য এখন জামিনে আছি।