চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে গুলিবর্ষণের ঘটনায় তিন সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন— রাউজান উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ সুমন, বাগোয়ান ইউনিয়ন কৃষক দলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল, ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরী, ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও যুবদল কর্মী মোহাম্মদ সোহেল। গুরুতর আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে শ্রমিক দল নেতা আবদুল্লাহ সুমনের বুকে গুলি লাগায় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আহতরা স্থানীয় একটি স্থানে আলাপ করছিলেন। এসময় মোটরসাইকেলে করে আসা একদল দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ সুমনের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আহত সবাই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী। তারা অভিযোগ করেছেন, দলটির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছে।

রাউজান উপজেলা বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, ৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালনের প্রস্তুতি সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, রাউজান উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক চৌধুরী অভির নেতৃত্বে ইমাম হোসেন, আলতাফ চৌধুরী টুটুল, জনি চৌধুরীসহ ৭৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলি চালায়।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তলের গুলির খোসা, একটি ছুরি, একটি ওয়াকিটকি ও একটি স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হামলার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ ছিল। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) কোয়েপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন রানা নামের এক ব্যক্তি রাউজান থানায় বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ করেন। তিনি জানান, তার ভাগ্নে হারুনুর রশীদ গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী, আর প্রতিপক্ষ ইমাম হোসেন গিয়াস কাদেরপন্থী। আধিপত্যের বিরোধ থেকেই পরদিন রাতের গুলির ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের ধারণা।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ইশতিয়াক চৌধুরী অভির কাছে অস্ত্র থাকার তথ্য আগেই পাওয়া গিয়েছিল। বুধবার রাতে সংঘর্ষের সময় তিনিই গুলি চালান বলে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ আরও জানায়, অভি নিজেকে প্রয়াত বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরীর ভাতিজা পরিচয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।