বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিগত ১৬ বছরে দেশে কথিত গণতন্ত্রের নামে নির্মম স্বেচ্ছাতন্ত্র ও জুলুমতন্ত্র চলেছে। রাসূল (সা.) বলেছেন, জালিম শাসকের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলাই সর্বোত্তম জিহাদ। তাই দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে হলে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এক প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি পবিত্র মাহে রমযানের শিক্ষায় তাক্বওয়া অর্জন ও আত্মগঠনে সকলকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশে এবারের রমাদান ভিন্ন এক পরিবেশে অতিবাহিত হচ্ছে। দীর্ঘ পনেরো বছর দেশের মুক্তিকামী মানুষ ও ইসলামপ্রিয় জনতা ভয়-ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যে রমাদান অতিবাহিত করেছিল। নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য যে সকল তরুণ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে দিয়েছে আমরা তাদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রতিদান কামনা করছি। বাংলাদেশ থেকে চিরদিনের জন্য ফ্যাসিবাদ বিলোপ হোক সেই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দামোদার ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউনিয়ন আমীর ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আহম্মেদের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মইনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, শেখ সিরাজুল ইসলাম, মোস্তফা আল মুজাহিদ, এডভোকেট সরদার ফিরোজ কবির। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ফুলতলা থানা আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলিম মোল্যা, নায়েবে আমীর মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান খান, ড. আজিজুল হক, শেখ আলাউদ্দীন, মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। ইফতার মাহফিলে মুসলিম উম্মাহ ও দেশ জাতির কল্যাণ সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, মাহে রামাদান কুরআন নাজিলের মাস। মানব জাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এই মাসে কুরআন নাজিল করা হয়। তিনি বলেন, কুরআনকে পড়ে-বুঝে কুরআনের আলোকে যেন মানুষ দুনিয়াবী জিন্দেগী পরিচালনা করতে পারে সেই উদ্দেশ্যে মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল করেছেন। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। এতেই মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মানবতার মুক্তি সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিলের মাস মাহে রামাদান হচ্ছে আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস। রমযান মাস হলো একটি বছরের প্রশিক্ষণের মাস। তাই পবিত্র মাহে রামাদান থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও শিশুদের কল্যাণে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে না। সামাজিক বৈষম্য ও ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে আনতে মাহে রামাদান হচ্ছে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কুরআন নাযিলের মাসে কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার শপথ নিতে হবে।