ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। গতকাল শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে ছাত্র সংসদের যে নির্বাচন হচ্ছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বৃহস্পতিবার যে জাকসু নির্বাচন হয়েছে সেখানে শুধু ছাত্র দলের কথা কেনো বলেন সেখানে বিভিন্ন প্যানেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী, ইভেন শিক্ষকরা পর্যন্ত নির্বাচন থেকে অনেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। নিশ্চয়ই সেখানে কোনো না কোনো কারণ আছে। কাজেই আমার বক্তব্য থাকবে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। দেশের মানুষ ২০০৯ এ ভোট দিতে পারে। ১৪ তে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে, ১৮ তে দিনের ভোট রাতে হয়েছে, ২৪ এ আমি-ডামি নির্বাচন হয়েছে। কাজেই বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চায়। যারা এ সমস্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তাদের উচিত হবে এমন কোনো নির্বাচন আয়োজন না করা যে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন আসবে, মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হবে, নির্বাচন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী দলসমূহ সরে যাবে।
ডাকসু নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম এবং জাকসুতে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জাহিদ। বিভক্তিতে স্বৈরাচার ফেরার পথ সুগম হবে মন্তব্য করে জাহিদ হোসেন বলেন, কোন বিভেদ-বিভাজন আপনাকে আমাকে শক্তিশালী করবে না। মনে রাখতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকলেই তাহলেই স্বৈরাচার পালিয়েছে, স্বৈরাচার ফেরত আসার পথ সুগম হবে না। কিন্তু কেউ যদি স্বৈরাচারকে পুনর্বাসিত করতে চান তাহলে এই ধরনের প্রহসনমূলক ব্যবস্থার আয়োজন করবেন যেটি সত্যিকার অর্থে শেষ বিচারে ভালো বলে পরিগণিত হবে না।
তিনি বলেন, এখনো সময় আছে সবার প্রতি আহ্বান আপনারা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হন। গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করেছেন তারা কোন অবস্থাতেই বিভাজনের রাজনীতিতে যাবেন না। ঐক্যের রাজনীতিতে আসুন। জনগণের মনের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। জনগণের ওপর দায়িত্ব দিন। যারা এই সকল প্রক্রিয়া(নির্বাচন প্রক্রিয়া) সাথে সম্পৃক্ত তাদের বলব, বামেও যাবেন না ডানেও যাবে না, মধ্যবর্তী অবস্থা অবলম্বন করুন এবং ভোটারদের সাথে জনগণের সাথে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলুন। কোনদিকে হেলে পড়ার দরকার নেই। আপনি আপনার নিরপেক্ষতা দিয়েই প্রমাণ করবেন এবং আগামী দিনের ভবিষ্যৎ স্বীকৃতি দিবে আপনার অবস্থান কি ছিল। আমরা আর এ ধরনের কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে, সেই নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা শিক্ষকরা সরে দাঁড়াবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিইএব) আহ্বায়ক মো. হানিফ ও সদস্য সচিব কাজী শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেলা ১১টায় শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে যান এবং পুষ্পমাল্য অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দরা কবরের সামনে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে শপথবাক্য পাঠ করেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রকৌশলী মো. হানিফের নেতৃত্বে ৩৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়।
নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে ডা. জাহিদ বলেন, ইদানীং অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বিপদগামী করার জন্য, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে প্রলম্বিত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেশ এবং বিদেশ থেকে হচ্ছে। এখানে পলায়নকৃত স্বৈরাচার অথবা রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি আজকে তারা তলে তলে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, আতাত করছে যাতে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত হতে না পারে। বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে একটি মডারেট ডেমোক্রেটিক কান্ট্রি হিসেবে যে তার সুনাম সেটি রাখতে না পারে।