বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির জন্য ইসলাম ব্যতীত অন্যকোনো আদর্শিক পথ খোলা নেই। শ্রমিকদের যাবতীয় সমস্যা-সংকট দূর করার সমাধান একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতিতে রয়েছে।
তিনি আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, মাস্টার শফিকুল আলম, কবির আহমেদ, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের মূল লক্ষ্য শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের মুক্তি। দেশে অনেক শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিক আন্দোলন আছে। এত এত সংগঠন থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকরা জুলুম থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। বরং প্রতিনিয়ত শ্রমিকরা অন্যায় অবিচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শ্রমিকদের বেতন ভাতা ও ন্যায্য পাওনা দিতে গড়িমসি করা হচ্ছে। যখন তখন কর্মস্থল থেকে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য একটি সত্যিকারের আদর্শবাদী আন্দোলন প্রয়োজন। বাংলাদেশের মাটিতে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের একমাত্র ঠিকানা বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। এই সংগঠনের আদর্শ হল ইসলাম। আর ইসলামী আদর্শ সকল মানুষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। এই আদর্শ কোনো জাতি গোষ্ঠী ও বর্ণের মানুষকে বিভাজনের চোখে দেখে না। বরং সকল মানুষের জন্য সমান সাম্য ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছে। এই আদর্শ বাস্তবায়ন হলে মালিক শ্রমিক কারো অপকার হবে না। বরং সবাই সমান সুবিধাভোগী হবে।
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক সংগঠনের প্রাণ হল ট্রেড ইউনিয়ন। আমাদের সংগঠনকে আরও মজবুত করতে হলে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ড-ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পর্যন্ত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে সত্যিকারের শ্রমিকবান্ধব সৎ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের কণ্ঠ হবে শ্রমিকদের জন্য। তাদের কণ্ঠস্বর সব সময় সত্যের পক্ষে। তারা শ্রমিকদের সুখে দুঃখে সর্বদা পাশে থাকবে। শ্রমিকরা ট্রেড ইউনিয়নমুখী হলে শ্রমিক সংগঠন মজবুত ও শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রম আইন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শ্রম আইনে ত্রুটি বের করতে হবে। শ্রম আইন সংশোধনের জন্য বৃহত্তর জনমত গড়ে তুলতে হবে। শ্রমিকরা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুললে দেশ থেকে সকল অন্যায় অবিচার ও জুলুমের অবসান ঘটবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় সকল শ্রমিকদের ইসলামের পতাকাবাহী পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।