ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনসংযোগ করতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন হলে প্রার্থীরা জুমার নামাযের পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এর আগে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। সেখানে নিজেদের নানা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে এদিন জুমার নামায আদায় করেন ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম ও জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ছাত্র শিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, শিবিরের প্যানেল বিজয়ী হলে নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকটের সমাধান হবে। আমরা বিজয়ী হলে নারীদের আবাসন নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না।

সাদিক কায়েম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এসবের সমাধান নিয়েই আমাদের ইশতেহার সাজানো হবে। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে শিক্ষার্থীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা নির্বাচিত হলে ‘লাঞ্চের পরে আসুন’ টাইপের কথাবার্তা চলবে না। রেজিস্ট্রার বিল্ডিং আধুনিকায়ন করা হবে। এছাড়াও, সেখানে শিক্ষার্থীদের পার্ট টাইম কাজের ব্যবস্থা থাকবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু এতে তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তারা ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল ভবন বানাচ্ছে, আর এদিকে শিক্ষার্থীদের আজিমপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদে কালচারাল সেন্টার স্থাপন, হলের অডিটোরিয়াম, রিডিংরুম ও মাঠ সংস্কার, অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, এক হলের ছাত্রীদের অন্য হলে প্রবেশের এক্সেস, হলের ভেতরে গার্ডিয়ান লাউঞ্জ স্থাপন, ডাকসুকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্তি, বাস সিন্ডিকেট নির্মুল, ডে-কেয়ার, চিলড্রেন কেয়ার স্থাপনসহ নানা বিষয় শিবিরের ইশতেহারে থাকবে বলে জানান তিনি। এ সময়, শিবিরের জিএস পদপ্রার্থী ও ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক মু. সাজ্জাদ হোসাইন খাঁনসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজয় একাত্তর হলে এদিন স্বতন্ত্র থেকে এজিএস প্রার্থী তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, সরদাম নাদিম মাহমুদ শুভসহ একাধিক পদপ্রত্যাশী নামাজ আদায় করেন। এরপর তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

শহীদুল্লাহ হলে নামাজ আদার করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। এ সময় আন্তর্জাতিক সম্পাদক প্রার্থী মেহেদি হাসানসহ একাধিক প্রার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেজে প্রচারিত গুজবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অতিদ্রুত এটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। আবিদ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দলের মধ্যে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমাদেরকে প্রার্থী হওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা জিয়া হলে মাহিন সরকার নামাজ আদায় করেন গতকাল শুক্রবার। পরে তিনি সেখানে শিক্ষার্থিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ ছাড়াও ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’, ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’সহ বিভিন্ন প্যানেল, স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রার্থী বিভিন্ন হলে নামাজ আদায়ের পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে নামাজ আদায় করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদারসহ তার প্যানেলের অনেকেই। এরপর তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এদিকে আজ শনিবার যাচাই বাছাইয়ের কাজ শেষ করবে নির্বাচন কমিশন।