বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক সংসদ সদস্য ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তিনটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংষ্কার করতে হবে, আইন সংশোধন করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সেক্টরে মৌলিক সংষ্কার করতে হবে। সংষ্কার না করে নির্বাচন হলে স্বৈরাচারীরা নতুন লেবাস ধারণ করে আবারও জাতিকে অন্ধকারে নিয়ে যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে নির্বাচন নিয়ে যে ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেই অবস্থা থেকে জাতিকে বের করে নিয়ে আসতে হবে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর আলফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর লিডারশীপ কর্মশালা -২০২৫ এর প্রথম দিনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন।

হামিদুর রহমান আযাদ আরো বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হওয়ার কথা থাকলেও মূলত পতন হয়েছে ফ্যাসিস্টের। আজকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিস্টের সহযোগিরা লুকিয়ে আছে। তারা ঐক্যে ফাটল এবং বিভাজনের জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সকলকে সজাগ, সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কেবলমাত্র ভোট গ্রহণের একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং নেতৃত্ব গঠন ও গণতান্ত্রিক পন্থায় দায়িত্ব গ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এই নির্বাচনী কার্যক্রম যথাযথভাবে ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। নির্বাচন সঠিকভাবে না হলে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে, ইনশাআল্লাহ।

হামিদুর রহমান আযাদ নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে আপনাদের বক্তব্য জাতির সাথে তামাশার শামিল হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতি আর কোন রকিব-হুদা-আউয়াল কমিশন মার্কা নির্বাচন দেখতে চায় না।

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল দলের স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ দ্রুত সময়ের মধ্যে রচনা করতে হবে। জুলাই বিপ্লবে যারা রক্ত দিয়েছে, তাদের প্রতি জুলুমকারীদের বিচারকার্য দৃশ্যমান করার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দূর করতে হবে। প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকায় আনতে হবে। স্থানীয় নির্বাচন আগে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি, সরকার একটি দলের প্রতি ঝুঁকে পরেছে। এতে সরকারের নিরপেক্ষতা হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, আপনারা নৈতিক অবস্থান থেকে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, সুশাসন, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আগামী নির্বাচন দেশ ও জাতির জন্য জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। কারণ মানুষ পরিবর্তন চায়। জনগণের আকাঙ্খা পূরণে আমাদের স্বার্থহীন প্রচেষ্টা চালাতে তিনি সকলের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত আবদুস সাদেক ভূইয়া প্রমুখ।