আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করেছি, ঐক্যবদ্ধ ভাবেই দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যাব। অচিরেই সব অনৈক্য দূর হয়ে যাবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুরআন সুন্নাহর আলোকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণ প্রস্তুত হয়ে আছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসালামী সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনগণকে সাথে নিয়ে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে। গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা আয়োজিত দিনব্যাপী ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড দায়িত্বশীলদের শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি উপস্থিত দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে সংগৃহীত লিখিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রশ্নোত্তর শেষে তিনি মিডিয়া কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। প্রশ্নোত্তর কালে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসালামী দেশকে আল্লাহর আইন, রাসূলের সাঃ এর সুন্নাহ অনুসারে এগিয়ে নেয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণ প্রস্তুত হয়ে আছে। আজকে সকল ইসলামী দল ঐক্যবদ্ধ। আজকে যে বিভাজন বিভক্তি দেখা যাচ্ছে সেই বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ অনৈক্য বেশিদিন থাকবে না। অচিরেই সব অনৈক্য দূর হয়ে যাবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ফেসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করেছি, ঐক্যবদ্ধভাবেই দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ। এটিএম আজহারুল ইসলাম এর ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আপনারা কী মনে করেন? আমীরে জামায়াত আপনাদের উপরে যাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন তারা কি আপনাদের কষ্ট বোঝেন না? আপনাদের দায়িত্বশীলরা কি যথাযথ ভূমিকা পালন করে না? আপনারা ধৈর্য ধারণ করুন। আস্থা রাখুন, আপনাদের দায়িত্বশীলরা দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধান অতিথি বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে যোগ্য লোক তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে দক্ষ,যোগ্য এবং সৎ লোকের কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বিগত দিনে জঙ্গিবাদ তকমা দিয়ে আলেম ওলামাদের উপরে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। মাদরাসা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বঞ্চনা শিকার হতে রয়েছে। মাদরাসা শিক্ষাকে অবহেলা করা হয়েছে। মাদরাসা থেকে পাস করা কোন ছাত্র বিসিএস এ অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তাদের কি অপরাধ? তাদের অপরাধ হলো তাদের শিক্ষায় মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ড। জামায়াত সন্দেহে অনেক লোককে চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়েছে। পদোন্নতি দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ চাইলে জামায়াত ক্ষমতায় গিয়ে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে।জামায়াত ক্ষমতায় গেলে অমুসলিমরা বঞ্চনার শিকার হবে সমাজের এরকম একটি প্রচলিত ধারণার ব্যাপারে তিনি বলেন, জামায়াত গত ৫৪ বছরে অন্য কোন ধর্মের লোকদের জমি-জমা দখল করেনি, অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের উপরে হামলা করিনি। জামায়াতের ব্যাপারে সারা বাংলাদেশের কোথাও এরকম কোন অভিযোগ পাওয়া যাবে না। সুতরাং এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। বরং জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষকে সাথে নিয়ে মিলেমিশে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলবে। সব ধর্মের মানুষের এখানে নিরাপদে থাকবে। সকল ধর্মের মানুষেরা এদেশের গর্বিত নাগরিক। কাউকে কোন প্রকার বঞ্চিত করা হবে না। যেখানে সকল ধর্মের মানুষেরা সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।

নারী সংস্কার আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি বলেন, আজ সমাজের উচ্চ শিক্ষিত নারীরাই নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতা করছে। নারী সংস্কার কমিশন কুরআনের বিধানের উপরে কুঠারাঘাত করেছে। সুতরাং নারী কমিশনের এই সুপারিশ বাতিল করতে হবে, নারী কমিশনেরও পুনর্গঠন করতে হবে। তিনি বলেন, আজকে দেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

সকাল ৮টা ২০ মিনিটে অধ্যক্ষ জহিরুল হকের পরিচালনায় তাফহীমুল কুরআন আলিয়া মাদরাসা মিলনায়তনে উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে দিনব্যাপী শিক্ষা শিবিরের সূচনা করেন জেলা আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ। উদ্বোধনী বক্তব্যের পরে দারসুল কুরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য সদস্য ও বরিশাল অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা ফখরুদ্দিন খান রাযী। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রব, জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম ও মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়াও শিক্ষা শিবিরে জেলার সকল দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং সকল উপজেলা আমীরগণ উপস্থিত ছিলেন।