নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনেই ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলের হয়ে আবেদন জমা দিতে রোববার (২২ জুন) নির্বাচন কমিশনে আসেন দলটির সদস্য-সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন মূখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ায়ারী, উত্তরাঞ্চল সমন্বয়ক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন, যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি।
আবেদনপত্র জমা দিয়ে সাড়ে ৪টার দিকে ব্রিফিংয়ে এসে সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, 'আমরা ইসি কর্মকর্তাদের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। নিবন্ধন শর্তপূরণ করে এমন সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এনসিপির দলীয় প্রতীক হিসেবে 'শাপলা' প্রতীক চেয়েছি।'
তিনটি প্রতীক আবেদনে উল্লেখ করলেও শাপলা প্রতীককে এনসিপির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেবে বলে প্রত্যাশা রাখেন তিনি।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোকে আবেদন করার জন্য গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। আবেদনের সময়সীমা ছিল ২০ এপ্রিল পর্যন্ত।
কিন্তু এনসিপিসহ কয়েকটি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময় দুই মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।
ইসিতে নিবন্ধনের জন্য কোনো দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকা, অনূর্ধ্ব এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় জেলা অফিস এবং অন্যূন ১০০টি উপজেলা বা ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন থানায় অফিস (যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত হতে হবে) থাকার শর্ত পূরণ করতে হয়। পাশাপাশি দলের গঠনতন্ত্রে কিছু বিষয় উল্লেখ থাকতে হয়।
গত ১ জুন ঢাকা মহানগর উত্তরে সমন্বয় কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এনসিপির কমিটি গঠন শুরু হয়। বুধবার পর্যন্ত দেশের ৩৩টি জেলা ও ১২৭টি উপজেলায় সমন্বয় কমিটি করেছে এনসিপি। এ কমিটিগুলোর মাধ্যমে পরে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দলটির আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবে।
এনসিপির প্রস্তাবিত খসড়া গঠনতন্ত্রে দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে কাউকে তিন মেয়াদের বেশি না রাখা, তিন বছর পরপর কাউন্সিল আয়োজনসহ বেশকিছু বিষয় রাখা হয়েছে।
নতুন দলের ক্ষেত্রে ইসির নিবন্ধনের শর্ত হল, দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে। কার্যকর কমিটি থাকতে হবে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায়।
সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা কিংবা মেট্রোপলিটন থানার কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের নথিও দেখাতে হবে।
দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন আবেদন করার সময় শেষ হচ্ছে রোববার। এ পর্যন্ত শ’খানেক দল আবেদন করেছে।