সলঙ্গা(সিরাজগঞ্জ) থেকে ফারুক আহমেদ : সিরাজগঞ্জ জেলার প্রাচীন জনপদ রায়গঞ্জ ও তাড়াশ। রায়গঞ্জ ও তাড়াশ চলনবিল অঞ্চল খাদ্যশস্য ও মৎস্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এলাকা। সাহিত্য-সংস্কৃতি ও রাজনীতিতেও এ মাটির সন্তানেরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কীর্তিমান।

সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনটি জনসমর্থনের দিক থেকে (আওয়ামী লীগে এবারের নির্বাচনে না থাকলেও) বিএনপির চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

১৯৯১ সাল থেকে মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের আগ পর্যন্ত এ আসনে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি ও আওয়া মীলীগ মনোনীত প্রার্থী। এবারে ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক ভাঙতে জোড় তৎপর রয়েছে জামায়াত। রায়গঞ্জ উপজেলায় একটি পৌরসভা, ৯টি ইউনিয়ন এবং তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও রায়গঞ্জ উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন মোট ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সলঙ্গার আসনটি গঠিত।

এ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬২ হাজার ৩১। এ আসনে পুরুষ এবং নারী ভোটার সংখ্যা প্রায় সমান সমান। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৭১ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮১ হাজার ১৬০ জন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ইসহাক হোসেন তালুকদারকে হারিয়ে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার এমপি নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচন এবং একই বছরের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইসহাক হোসেন তালুকদারকে আবারও পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমকে পরাজিত করে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদার টানা চতুর্থবারের মত এমপি নির্বাচিত হন।

এরপর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নান তালুকদারকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের ইসহাক হোসেন তালুকদার এমপি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর একতরফা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসহাক হোসেন তালুকদার । এমপি থাকালে ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবরে ইসহাক হোসেন তালুকদার মৃত্যুবরণ করেন।

পরে এ আসনে উপ-নির্বাচনে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের পতিত স্বৈরাচারি মানবতা বিরোধী অপরাধী আওয়ামী লীগ নির্বাচনী মাঠে না থাকলেও বর্তমানে বিএনপির নেতাদের মধ্যে দলীয় কোন্দল দৃশ্যমান। অন্তদ্বন্দ্বের কারনে তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আসনে বিএনপির চেয়ে প্রচার-প্রচারণায় জামায়াত এগিয়ে। আগামী নির্বাচনে রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনে থেকে বর্তমান বিএনপির প্রায় ১৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মোনোনীত রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও সলঙ্গা আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রফের শায়েখ ড. মাওলানা মোহাম্মাদ আব্দুস সামাদ দলের দূর্দিন থেকে শুরু করে আজও দলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকে এলাকার মানুষের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই রায়গঞ্জ-তাড়াশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে তিনি স্কল,কলেজ, মাদরাসার, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এমনকি হাট-বাজারের অলিগলিতে দিন রাত পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকেই বিএনপির দলিয় মনোনয়ন দৌড়ে জোড় লবিং চালিয়ে যাচ্ছে অনেক নেতারাই। অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ একজন এলাকায় ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসাবে পরিচিত। রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গার নেতাকর্মীদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে অসহায় গরীবদের চিকিৎসা সেবা দেয়া, কন্যা দায়গ্রস্থ মেয়ের বিয়েতে সহায়তাদান, দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ায় সাহায্য করা, অস্বচ্ছল কর্মীদের দেখভালসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন ।

এছাড়া এ আসনে তাড়াশ উপজেলার ভোটার সংখ্যার চাইতে রায়গঞ্জ উপজেলার ভোটার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন। যার কারনে এ আসনে জিততে হলে রায়গঞ্জ এলাকার প্রার্থীকেই বেছে নিতে হবে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে রায়গঞ্জ-তাড়াশের মধ্যবর্তী স্থান রায়গঞ্জের ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া গ্রামের অধিবাসী হিসেবে অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ এবারের নির্বাচনে জয়যুক্ত হবে বলে অনেক নেতাকর্মীসহ রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও সলঙ্গার সর্বস্তরের জনসাধারণ মনে করেন।

এলাকার অধিকাংশ নেতা-কর্মী ও বিপুলসংখক জনসাধারণ তার সাথে কাজ করছেন। তরুণ মেধাবী পরিছন্ন নেতা হিসাবে অসহায় গরীবদের পাশে থেকে সহায়তাদান, গৃহহীন মানুষকে ঘর তুলে দেয়া, দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ায় সাহায্য করা,অস্বচ্ছল পঙ্গু মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করাসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডে ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন।

এ আসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা সবুজ্জল হোসেন উজ্জল, আলহাজ্ব দুলাল হোসেন খান, সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের সুযোগ্য পুত্র রাহিদ মান্নান লেলিন, জাতীয় বাদি দল বিএপি জার্মান শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ, তাড়াশ থানার সাবেক সভাপতি আফছার আলী, ভিপি আয়নূল হকসহ অনেকেই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। ইতিমধ্যে তারাও গণসংযোগ, ব্যানার ফেস্টুন, পোস্টার লাগিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক ভাবে দলকে শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তারা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে মতবিনিময় ও সভা সমাবেশ করে যাচ্ছি।