জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং এর ভিত্তিতে নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণাসহ ৬ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খেলাফত মজলিস। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।

এর আগে সকাল ১০টায় উক্ত হলে খেলাফত মজলিস মনোনীত দেওয়াল ঘড়ি প্রতিকের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন আমীরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক সিরাজুল হক, মাওলানা আবদুল হামিদ, যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল জলিল, ডা. এ এ তাওসিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, মাওলানা শামসুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক মাওলানা এ এস এম খুরশিদ আলম, মাওলানা শেখ মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন, অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব আলম, অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু সালেহীন, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান ফিরোজ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর ভিত্তিতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অন্য দিকে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ ঘোষণার আগেই নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে জনগণের মধ্যে একদিকে কাঙ্কিত সংস্কার নিয়ে যেমন সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে অন্য দিকে যথাসময়ে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য ইতোমধ্যেই খেলাফত মজলিস জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারি ২০২৬’র জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা সহ ৬ দফা দাবিতে ৩ দফা কর্মসূচী পালন করেছে। জনগণ এসব কর্মসূচীতে ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছে। এমতাবস্থায় অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ ঘোষণা করা ও এর আইনি ভিত্তি দেয়া। ঘোষিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারি ২০২৬’র জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।

জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য খেলাফত মজলিসের প্রস্তাবনা:

ক. জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ স্বাক্ষরের পর দুই মাসের মধ্যে গণভোটের মাধ্যমে এই সনদকে সাংবিধানিক ও আইনি মর্যাদা বা বৈধতা প্রদান করা।

খ. জুলাই সনদে রাষ্ট্রীয় পলিসি বা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়গুলো অর্ডিনেন্স বা নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা। আর সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন তথা সাংবিধানিক ঘোষণার মাধ্যমে আশু কার্যকর করা। তবে শর্ত হচ্ছে যে, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন ছাড়াই সেগুলো আনুষ্ঠানিক অনুমোদন করতে সংসদ সদস্যগণ বাধ্য থাকবেন- এ মর্মে সকল দল ও পক্ষের কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা। আমাদের এ প্রস্তাবনার সাথে ঐকমত্য কমিশনে প্রেরিত দেশের আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও প্রস্তাবনারও মিল রয়েছে। কিন্তু আমাদের এ প্রধান দাবিসহ ৬ দফা দাবী পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে তাৎপর্যপূর্ণ কোন পদক্ষেপ দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় আমরা নিম্নোক্ত নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করছি:

৫-৯ অক্টোবর গণসংযোগ, ১০ অক্টোবর ঢাকা সহ বিভাগীয় শহরে গণমিছিল, ১২ অক্টোবর সারাদেশে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। এ ছাড়াও খেলাফত মজলিস আগামী ১৫-৩০ অক্টোবর সারাদেশে সংসদীয় আসন ভিত্তিক পক্ষকালব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচী পালন করবে।