গণমানুষের ৫ দফা দাবি মেনে না নিয়ে কোন কোন উপদেষ্টা যদি একটি রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে, তাদের নাম জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’ এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা’-এই ৫ দাবি গণমানুষের মুক্তির দাবি। এই ৫ দফা বাস্তবায়িত হলে মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
পিআর পদ্ধতিকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করে গণভোটের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী (আমিন বাজার) পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, হাজার হাজার মানুষ সড়কে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করার পরও যদি সরকারের কানে না যায়, সরকার যদি জনগণের চোখের ভাষা, মুখের ভাষা না বোঝে, তবে সরকার যেই ভাষা বুঝতে চায়Ñজনগণের দাবি আদায়ে সেই ভাষায় দাবি আদায় করা হবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু সরকার যদি সড়ক অবরোধ চায়, সরকার যদি রাজপথ উত্তাল দেখতে চায়, তবে জামায়াতে ইসলামী ইচ্ছার বিরুদ্ধেও সেই কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের পরিচালনায় রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল যথাক্রমে মাওলানা এটিএম মা’ছুম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াছিন আরাফাত, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দসহ বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় এবং মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন চায়। জামায়াতে ইসলামী ব্যক্তি বা পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি করে না; দলীয় স্বার্থের রাজনীতি করে না। জামায়াতে ইসলামী গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই জনগণ তাদের পতন চায়। ৫ আগস্ট পরবর্তী ঐ দল ক্ষমতায় না থেকেও নিজেদেরকে ক্ষমতাসীন মনে করে সারাদেশে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, লুটপাট ও দখলদারিত্ব শুরু করেছে। তাদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। ঐ দলটি কথায় বলে তারা সংস্কার চায়, কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে বসলে নানা রকম টালবাহানা করে। দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা হাসিনা মার্কা প্রহসনের নির্বাচন চায়। মনে রাখতে হবে, এ দেশে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আর কোনো নির্বাচন হতে পারবে না। জনগণ এখন সজাগ ও সতর্ক রয়েছে।
ডা. তাহের বলেন, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের টেস্ট ম্যাচ হতে পারে। তিনি বলেন, যারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় না, মেনে নিতে পারছে না- তারা যুক্তি দেখাচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হলে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে জনগণ ভোটের প্রতি আস্থা হারাবে, যার প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে। গণভোটে সমস্যা কারা করবেÑপ্রশ্ন রেখে ডা. তাহের বলেন, এজন্যই তো জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হওয়া জরুরি। কারণ যারা সমস্যা সৃষ্টি করবে, তারা জনগণ ও সরকারের কাছে চিহ্নিত হবে। তাদেরকে চিহ্নিত করতে হলেও গণভোটকে জাতীয় নির্বাচনের টেস্ট ম্যাচ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একদিনে করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য খারাপ। কারণ, গণভোটে জুলাই সনদ পাস হয়ে গেলে জাতীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন আসবে। নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে তারা ভোট চুরি করতে পারবে না, কেন্দ্র দখল করতে পারবে না। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হয়ে গেলে তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারবে না, একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। এ জন্য তারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ঠেকাতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন প্রসঙ্গে ডা. তাহের বলেন, প্রশাসনে একটি দলের অনুগত লোকদের বসিয়ে প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছেÑ কোনো দলের অনুগত ব্যক্তিকে জনপ্রশাসন সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে না। কিন্তু দেখা গেছে, বাস্তব চিত্র তার উল্টো। যাকে জনপ্রশাসন সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত একজন ব্যক্তি, যিনি একটি দলের প্রতি সরাসরি অনুগত।
ডা. তাহের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করে নিরপেক্ষ লোকদের পদায়ন করুন। প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনি বিশ্বব্যাপী একজন গ্রহণযোগ্য মানুষ; কিন্তু যারা আপনাকে ব্যবহার করে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে, তাদের সরিয়ে দিন। নতুবা আপনার গ্রহণযোগ্যতা বজায় থাকবে না। আপনি যদি তাদের চিহ্নিত করতে না পারেন, আমাদের কাছে তালিকা আছেÑআপনি চাইলে আমরা তালিকা দিতে প্রস্তুত আছি। নতুবা আমরা জাতির সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে বাধ্য হবো। পরবর্তীতে আপনাকেই এর সকল দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। আপনি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ও জাতির ভবিষ্যৎ স্থায়ীভাবে শান্তিপূর্ণ করতে ৫ দফা দাবি মেনে নিন। এতে শুধু জামায়াতে ইসলামীর নয়, জাতির মঙ্গল হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করা’ এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও বিচারের মুখোমুখি করা’Ñগণমানুষের দাবি। সরকার যদি গণমানুষের দাবি উপেক্ষা করে গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একদিনে করতে চায়, তাহলে বুঝতে হবে সরকার একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। নভেম্বরে গণভোট এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে সরকার গড়িমসি করলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করতে জনগণ বাধ্য হতে পারে। তাই সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে ৫ দফা দাবি মেনে নিতে তিনি আহ্বান জানান। একই দাবিতে সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে জুলাই সনদের ভিত্তিতে এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে রাজশাহীতে জামায়াতের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর জিরো পয়েন্ট থেকে আলুপট্টি এবং জিরো পয়েন্ট থেকে নিউমার্কেট রোডে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে ও মহানগরী জামায়াতের যুব বিভাগের সেক্রেটারি সালাউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর এ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম, নায়েবে আমীর ও রাজশাহী সদর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডাক্তার মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর, সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মন্ডল, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল ও শাহাদৎ হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সরকার, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, মহানগরী জামায়াতের শিল্প ও বাণিজ্য সেক্রেটারি অধ্যাপক এ কে এম সারওয়ার জাহান প্রিন্স, তারবিয়াত সেক্রেটারি হাফেজ নুরুজ্জামান, সহকারী প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান আশু প্রমুখ।
খুলনা ব্যুরো : পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর বাবরী চত্বরে (শিববাড়ি মোড়) অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নিশ্চিতকরণ, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়ন, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার ও বিচারকালীন তাদের নিষিদ্ধের দাবিতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি অভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।
মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম ও প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় বক্তব্য দেন খুলনা মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মহানগরী সেক্রেটারি ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মহানগরী অফিস সেক্রেটারি মিম মিরাজ হোসাইন, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, আ স ম মামুন শাহীন, মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, এডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক স ম এনামুল হক, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, দৌলতপুর থানা আমীর মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমীর মুনাওয়ার আনসারী, লবণচরা থানা আমীর মোজাফফর হোসেন, খুলনা সদর থানা সেক্রেটারি আব্দুস সালাম, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি মাওলানা জাহিদুর রহমান নাঈম, খালিশপুর থানা সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দীন প্রমুখ।
সিলেট ব্যুরো: জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, দুই হাজার ছাত্র-জনতার শাহাদাতের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। সেই দেশে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য এখনো রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। যা জুলাই চেতনা ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ ও আহতদের রক্তের সাথে প্রতারণার শামিল। জামায়াত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষা পূরণে অঙ্গিকারাবদ্ধ। দেশে ফেব্রুয়ারীতেই নির্বাচন হবে। তবে এর আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরে গণভোট দিতে হবে। একই সাথে জামায়াতের ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। অন্যথায় জনতার চলমান আন্দোলন অগ্নিস্ফুলিংয়ে রূপ নিবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ জামায়াতের ৫ দফা দাবির প্রতি জনগণ এবং সব রাজনৈতিক দল একমত। শুধু একটি দলের কারণে গণভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা সবকিছু পরবর্তী সংসদের হাতে দেয়ার কথা বলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। কিন্তু এই স্বপ্ন আর পূরণ হতে দেয়া হবেনা। জুলাই আকাক্সক্ষার বাস্তবায়ন করেই ফেব্রুয়ারীতেই নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীতে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে পিআর পদ্ধতিকে জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত করে গণভোটের দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত বিশাল মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জামায়াত কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় নগরীর শহীদ মিনারস্থ চৌহাট্টা পয়েন্ট থেকে মানববন্ধটি শুরু হয়ে নগরীর জিন্দাবাজার-বন্দরবাজার হয়ে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট (কিনব্রিজের মুখ) পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে। মানববন্ধনে সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াতের বিভিন শাখার পৃথক ব্যানার হাতে নিয়ে হাজার হাজার জনশক্তি অংশ নেন। এছাড়া মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার শত শত মানুষ অংশ নেন।
সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর সিলেট-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ আনওয়ার হোসাইন খান, জেলা সেক্রেটারী, সাবেক জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সিলেট-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জয়নাল আবেদীন, জেলা সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা মাসুক আহমদ ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগরী সভাপতি শাহীন আহমেদ।
এদিকে কোর্টপয়েন্ট এলাকায় মহানগর সহকারী সেক্রেটারি জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় মানববন্ধন চলাকালে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, জেলা সহকারী সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিনসহ জেলা ও মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বরিশাল অফিস : ভোটের সুরক্ষা নিশ্চিতে পিআর এর বিকল্প নেই : অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মু.বাবর।
আমাদের দেশে ভোটের কোন নিরাপত্তা নেই, দেশের জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠিত না হয়ে রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নের এর মাধ্যমে অনেক রাজনৈতিক শক্তি এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। ভোটের নামে বার বার এদেশের জনগণনের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে, জনগণের ভোটের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পি আর পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগর আমীর অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মু. বাবর। তিনি ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর সদর রোডে মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বরিশাল মহানগরী আমীর অধ্যক্ষ জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর।
মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাহমুদ হোসাইন দুলাল, সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার মিজানুর রহমান, মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ, তারিকুল ইসলাম, মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা শফিউল্লাহ তালুকদার, শামীম কবির, জাফর ইকবাল, মাহফুজুর রহমান আমিন, কাউনিয়া থানা আমির মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
কুমিল্লা অফিস : জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশহিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম কুমিল্লা মহানগরীর উদ্যােগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৩০ কুমিল্লা টাউনহলের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে।এসময় নগরীর টাউন হল থেকে শুরু করে মনোহরপুর,রাজগঞ্জ,বাদুরতলা, লাকসাম রোডে বিভিন্ন পোষ্টার ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করে।
কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ এর সভাপতিত্বে নগর জামায়াতের সেক্রেটারি মু.মাহবুবর রহমানের পরিচালনা বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিস শূরা সদস্য ও কুমিল্লা অঞ্চল টিম সদস্য আব্দুস সাত্তার,কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মু.কামারুজ্জামান সোহেল,কাউন্সিল মোশাররফ হোসাইন, নাছির আহম্মেদ মোল্লা।মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এড এয়াকুব আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসাইন, আমীর হোসাইন ফরায়েজী।
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ভাওয়াল রাজবাড়ি সড়ক সংলগ্ন এলাকায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মানববন্ধন থেকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং উক্ত আদেশের উপর গণভোট আয়োজনের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালুর আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য সমান সুযোগ বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডথ নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিও উত্থাপন করা হয়।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং গাজীপুর সদর মেট্রো থানা জামায়াতের আমির ও গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আইউবীর সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও গাজীপুর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোঃ হোসেন আলী, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, সহকারী সেক্রেটারি মোঃ আফজাল হোসাইন, আজহারুল ইসলাম মোল্লা, গাজীপুর-৬ আসনের প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান, মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন, গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট শামসুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান কামাল, ডাঃ আমজাদ হোসেন খান, এডভোকেট সাদিকুজ্জামান খান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতি রেজাউল ইসলাম,টঙ্গী পশ্চিম থানা জামায়াতের আমির আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া,কোনাবাড়ি থানা আমি ডাক্তার কবির হোসেন, কাশেমপুর থানা আমির মোঃ ফরহাদ হোসেন, পুবাল থানা আমির আশরাফ আলী কাজল, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম জামি, মনির হোসেন, গোলাম মোস্তফা, মাওলানা একলাছ উদ্দিন, এডভোকেট শাহজাহান সিরাজি, ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা নাজমুল ইসলাম প্রমুখ।