বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, আমাদের শত শত কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য যুবককে থানায় ধরে নিয়ে, পায়ে বন্ধুক ঠেকিয়ে গুলী করে পা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। হাত কেটে ফেলা হয়েছে, ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, গুম করা হয়েছে, চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই কষ্টগুলো বুকে বহন করছি। শুধু আমরা নয়, গোটা জাতি এ অবস্থার শিকার হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, রাজনৈতিক দল, ওলামায়ে কেরাম, প্রতিবাদী কন্ঠ, সাংবাদিকসহ কাউকেই তারা (আওয়ামী লীগ) ছাড় দেয়নি। সবার ওপর তারা জুলুম করেছে। লাখ লাখ মামলা দিয়ে কোটি মানুষকে বারবার জেলের মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। আওয়ামী জাহেলিয়ার যুগ আর বাংলাদেশে ফিরে না আসুক। সে জন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, মাহে রমযানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সমাজের সব স্তরে ন্যায় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার শপথ নিতে হবে। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আত্মশুদ্ধির মাস মাহে রমযান থেকে শিক্ষা নিয়ে ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের শপথ নিতে হবে। রোববার (১৬ মার্চ ) খুলনা মহানগরীর ১৩ ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
১৩নং ওয়ার্ড আমীর মানজারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি লোকমান হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, খালিশপুর থানা আমীর আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল, সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল জলিল হিমেল ও থানা কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েত হোসেন।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আরও বলেন, পবিত্র রমযান মাস আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের মাস। বেশি বেশি সাদাকার মাধ্যমে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর মাস, রমযান মাস মানবতার জন্য বিশেষ গুরুত্ব রাখে, এই মাসে ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী জনগণের কাছে ন্যায্য মূল্যে পৌঁছানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, রমযানের শিক্ষা আমাদের নৈতিকতা এবং ধর্মীয় আমলকে আরও শুদ্ধ করে তোলে। আমাদের দায়িত্ব হলো রমযানের শিক্ষার আলোকে নিজেদেরকে গড়ে তোলা এবং ইসলামের সুমহান বাণী আমাদের এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পৌঁছে দেয়া। তিনি আরও বলেন, যাকাত সমাজে একটি কল্যাণমূলক ব্যবস্থা। ইসলামী শরিয়া মোতাবেক সম্পদশালী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের একটি অংশ মহান রবের খুশির জন্য দরিদ্র্য অসহায় ব্যক্তিদের মাঝে বিলিবন্টন করলে অস্বচ্ছল ব্যক্তিরা স্বচ্ছল হয়। ধনী ও গরীব শ্রেণির মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ হয়। পরিশেষে তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে যাকাত আদায়ের প্রতি যত্নশীল হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইফতার মাহফিল শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয় বরং এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধি ও সমাজের কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের প্রতিফলন।