চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত শনিবার বিকেলে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না। দেশে তারা ফ্যাসিবাদী শাসন ও বাকশাল কায়েম করেছে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “আজকের এই সমাবেশ কেবল চট্টগ্রামে নয়, ঢাকার নিউ মার্কেটেও সমাবেশ হচ্ছে, এবং দাবিটা একটাই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জিয়াউর রহমান প্রথম সংস্কার এনেছিলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছেন, গার্মেন্টস শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেছেন। খালেদা জিয়া কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা চালু করেছেন। অথচ বিদেশ থেকে এসে বড় বড় কথা বললে মানুষ সব ভুলে যাবে এটা হতে পারে না।”
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, “তোমরা ব্যবসা চাও, চাকরি চাও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি চাও। আমরা এমন এক গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে চাই, যেখানে মানুষ মুক্তভাবে কথা বলতে পারবে। আজকের সমাবেশের উদ্দেশ্য হলো তরুণরা জেগে উঠো, ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করো এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করো।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য লড়েছেন, আর তারেক রহমান আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে চান। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কোনো কিছু চাই না। তারেক রহমান বলেছেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’, আর রাজপথেই হবে ফয়সালা।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই, যেখানে মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের পতাকা উড়বে গর্বের সাথে। ওয়াসিমের রক্তের বিনিময়ে যে নতুন স্বাধীনতার স্বপ্ন, তা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি রাখি।”
সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্র, শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ দূরদূরান্ত থেকে এসে ভিড় করেছেন। কেউ হেঁটে, কেউ বাস বা ট্রাকে, আবার কেউ ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মিছিল নিয়ে পলোগ্রাউন্ডে উপস্থিত হয়েছেন। অনেকেই টাইগারপাস মোড়ে জড়ো হয়ে বড় মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিমসহ আরও অনেকে।