আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাতভর স্লোগানমুখর ছিল চত্বর। রাতভর শাহবাগে অবস্থান করেছে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ইসলামী দলগুলো। বিএনপি এ কর্মসূচীতে অংশ না নিলেও উত্তপ্ত স্লোগানে জেগে ছিল শাহবাগ।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার (৯ মে) রাতভর শাহবাগ ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকারী শক্তির দখলে। কেউ জাতীয় পতাকা উড়িয়েছেন, আবার কেউ সুর তুলেছেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রচিত গানে। আন্দোলনের স্পিরিট ধরে রাখতে জায়ান্ট স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অকুতোভয় সংগ্রাম আর আন্দোলনের সময়কার ভয়াল ছবি।
জানা যায়, শাহবাগ মোড়ের পশ্চিম দিকে স্থাপিত জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিনে রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় এ প্রদর্শনী। শেখ হাসিনার শাসনামলের অত্যাচার ও নির্যাতনের ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয় সেখানে।
এলইডি স্ক্রিনে কখনও ভেসে উঠেছে বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি, কখনও দেখানো হয়েছে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞের চিত্র।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে চলমান আন্দোলনে আড়াই ঘণ্টার বিরতি টানার ঘোষণা দেন ইনকিলাব মঞ্চের মূখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী। এরপর ধীরে ধীরে অনেকেই সেখান থেকে চলে গেলেও রাস্তায়ই ঘুমিয়ে পড়েন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আরও কয়েকজন। কেউ কেউ আবার আড্ডাও দিচ্ছিলেন।
প্রসঙ্গত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বুধবার (৮ মে) রাত ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে অবস্থান নিয়ে প্রথমে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্র-জনতা পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
শুক্রবার (৯ মে) বাদ জুমা সেখানে সমাবেশ শেষে বিকাল ৪টার পর থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এরপর রাতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশের বিভিন্ন পয়েন্টে গণজমায়েত কর্মসূচীর ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শনিবার তিনটায় শাহবাগে গণজমায়েত ঘোষণা করছি। সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। দেশের প্রত্যেকটি পয়েন্টে যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ব্লক করা হয়েছিল, সেসব পয়েন্টে এই গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে বিএনপি ও বামদলগুলো এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান এ কর্মসূচীতে সাড়া দিয়ে সম্পৃক্ত হয়নি। তবে, কর্মসূচীতে নামা দলগুলোর বক্তব্য, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না তারা।