লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন নিহতের ঘটনায় ১৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার ভোররাতে ঢাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২৪ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- আবুল খায়ের গাজী, খালিদ গাজী, জাকির হোসেন, আবদুল মান্নান গাজী, সিদ্দিক আলী, সোলায়ানমান দেওয়ান, নেসার উদ্দিন, ইমাম হোসেন, মিজান সরদার, শাহদাত হোসেন, খিজির আহমেদ, তসলিম উদ্দিন, হানিফ দেওয়ান ও হারুন।

এর আগে এ ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে একই ঘটনায় পৃথক দুইটি হত্যা মামলায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন। তিনি জানান সম্প্রতি দুইটি পৃথক সংঘর্ষের গঠনায় বিএনপির দুইজন মারা যায়। এসব ঘটনায় পৃথক দুইটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই দুই মামলায় ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এর মধ্যে জসিম উদ্দিন হত্যা মামলায় র‌্যাবের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে ১৪জন ও সাইজ উদ্দিন হত্যা মামলায় আগে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই মামলায় এখন পর্য়ন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে সাইজ উদ্দিন নামে এক বিএনপি কর্মী প্রাণ হারান। এর ৭দিন পর আহত স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা জসিম উদ্দিন ব্যাপারী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার তিনদিন পর নিহত সাইজ উদ্দিনের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে বিএনপি নেতা ফারুক কবিররাজকে প্রধান করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও ১৮৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একইভাবে জসিম উদ্দিন ব্যাপারী নিহতের ঘটনায় তার বাবা হজল করিম ব্যাপারী বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রায়পুর থানায় পৃথক আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তাছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও কৃষকদলসহ অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করে রায়পুর উপজেলা বিএনপি।