জুলাই সনদ স্বাক্ষর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে কমিশনগুলো গঠন করেছিলেন সেগুলো প্রায় দীর্ঘ ৮ মাস পরিশ্রম করে আজকে এই সনদ(জুলাই সনদ) স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। আমি সেজন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস, সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন, যারা কাজ করেছেন, যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, যারা সংস্কার কমিশনে দীর্ঘদিন ধরে দিনের পর দিন কাজগলো করে এটা করেছেন এবং আমাদের দলের সালাহ উদ্দিন আহমদসহ সব দলের সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

পরে বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ যিনি জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন এবং সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় দলের নেতৃত্ব দেন তাকে কথা বলতে বলেন।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই সনদ-২০২৫ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটা এই জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। এটা আমাদের কাছে সব সময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে যতদিন বাংলাদেশের ইতিহাস থাকবে। আজকে শহীদের রক্তদান এই জাতির আকাক্সক্ষা, জনপ্রত্যাশা সবকিছু পূরণের শুরু হলো কেবল এটা যাত্রা। এগুলো বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা একটি গণতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো আমরা অর্জন করতে পারব। যে রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন যাত্রা শুরু হবে।

তিনি বলেন, এই যাত্রা মধ্য দিয়ে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্মিত হবে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্মিত হবে, রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে ভারসাম্য সৃষ্টি হবে। রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ কোন অঙ্গ আরেকটি অঙ্গের উপরে কর্তৃত্ব প্রদর্শন করতে পারবে না। সাংবিধানিক সীমারেখার মধ্য থেকে সমস্ত অঙ্গ সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষা করে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করা হবে ইনশাল্লাহ। সেই দিনের আশায় আমরা আছি। সামনেরে দিনে আমাদের অনেক কাজ। এই কেবল যাত্রা শুরু।

সালাহ উদ্দিন বলেন, সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছেন। যারা দুই-একজন স্বাক্ষর করেন নাই। আশা করি তারাও ভবিষ্যতে স্বাক্ষর করবেন। সেটা উস্মুক্ত রাখা আছে। আমি এইখানে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সকল সদস্যবৃন্দ এবং অন্যান্য সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দ যারা দীর্ঘ আলাপ আলোচনা নিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, অভিনন্দন জানাই। মিডিয়া কর্মী হিসেবে সাংবাদিক বন্ধুরা আপনারা দিনরাত পরিশ্রম করেছেন, আমাদের সাথে কাজ করেছেন আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।

এক প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, সাংবিধানিকভাবে আর্টিকেল ৬৫ এর সাব সেকশন টুতে বলা আছে, বাংলাদেশের প্রত্যেক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার মধ্যে সরাসরি প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তিনশেষ জন জাতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য হবেন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী সদস্য থাকবেন। এখন কেউ কেউ সেটা বর্ণনা করছেন যে, নির্বাচন কমিশন শুধু নির্বাচন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কিছু না, এটা সত্য। নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন পরিচালনা করবেই কিন্তু কিভাবে করবে সেটা বর্ণিত আছে। সুতরাং জাতিকে বিভ্রান্ত করার কোন সুযোগ নাই। তারপরও প্রধান উপদেষ্টা যদি আলাপ আলোচনা করতে চান আমরা আলাপ আলোচনা বিশ্বাস করি।