এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও ঢাকা-৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাজী এনায়েত উল্লাহ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী নিজস্ব স্বার্থে রাজনীতি করে না, জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হলে আবারও দুর্নীতিবাজরা লুটপাট করবে। যারা ইতোমধ্যে ১৭ বছর না খেয়ে ছিল দাবি করে ৫ আগস্ট পরবর্তী থেকে খাওয়া শুধু করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতিবাজ চোরদের হাতে ক্ষমতা গেলে তারা দেশকে আবারও দুর্নীতি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করবে’’। গরিবের রিলিফের চাল খেয়ে ফেলবে, উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা মেরে দিবে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দিবে। যাতে ক্ষমতা চলে গেলে বিদেশে বসে বিলাসী জীবনযাপন করতে পারে। বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় থেকে দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে তাদেরকে আর ক্ষমতায় বসানো যায় না। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ জামায়াতে ইসলামীতে দুর্নীতি নাই, সন্ত্রাস নাই, চাঁদাবাজ নাই। তাই জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আলেম-ওলামাদের সমন্বয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চকবাজার দক্ষিণ থানার উদ্যোগে ঢাকা-৭ সংসদীয় এলাকার বড় কাটারায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, ঢাকা-৭ সংসদীয় এলাকার জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে পুরান ঢাকার ঘনবসতি এলাকার গণমানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে”। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কেবলমাত্র গতানুগতিক একটি রাজনৈতিক সংগঠন নয়, জামায়াতে ইসলামী গণমানুষের কল্যাণের একটি আদর্শিক সংগঠন। জামায়াতে ইসলামী ৪ দফা ভিত্তিতে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা। এখন যারা ৩১ দফার ঘোষণা দেয় তারা অতীতেও মানুষকে নানান রকম দফার স্বপ্ন দেখিয়েছে। মূলত তাদের দফা ছিল একটাই সেটা হচ্ছে লুটপাট আর দুর্নীতি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদক মুক্ত করতে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবে। দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারিদের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। জনগণ শান্তিতে ও নিরাপদে ঘুমাতে পারবে। জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই জামায়াতে ইসলামীর প্রধান লক্ষ্য। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রত্যেকের নাগরিক জান ও মালের নিরাপত্তা এবং মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তাই আগামী নির্বাচনে পুরাতন ব্যবস্থাকে বয়কট করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানান।
"নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক"- ঢাকা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, সারাদেশের ন্যায় ঢাকা -৭ আসনকে একটি নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। আগামীতে জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে ঢাকা-৭ আসনকে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-দুর্নীতিমুক্ত একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক এলাকা হিসেবে জনগণকে উপহার দেওয়া হবে। জনভোগান্তি দূরীকরণে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস- বিদুৎ ও পানি সরবরাহের পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দৌড়গৌড়ে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি শিশুদের মেধা বিকাশে খেলাধুলা ও সুস্থ বিনোদনের আয়োজন করা হবে। মাদক মুক্ত করতে যুব সমাজের জন্য খেলাধুলা ও শরীর চর্চার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হবে। "আমার ঢাকা, আমাদের ঢাকা; গড়বো মোরা একসাথে" স্লোগানে ঢাকা-৭ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণকে একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য মানবিক শহর উপহার দেওয়াই জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার। সব দল দেখা শেষ উল্লেখ করে তিনি, জামায়াতে ইসলামীকে পরীক্ষামূলক একবার নির্বাচিত করা আহ্বান জানিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গীকার, জাতি পাবে নিরাপদ এক কল্যাণ রাষ্ট্র। জুলাইয়ের শহীদদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সমর্থন দিতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
চকবাজার দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারী মো. রেজাউল করিমের পরিচালনায় উদ্বোধনী সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগরী দক্ষিণের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ডা. তোফাজ্জল হোসেন এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মো. শামসুদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চকবাজার পূর্ব থানা আমীর মো. রফিকুল ইসলাম, লালবাগ পূর্ব থানা সেক্রেটারী মো. আবুল খায়েরসহ ঢাকা-৭ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।