বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য কর্মকান্ড বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। মসজিদের মতোই মন্দির-গির্জাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয় নিরাপদ থাকবে। ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী, দলমতের কোনো বিভাজন সৃষ্টি হতে দেয়া হবে না। প্রতিটি মানুষ রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সমান মর্যাদা ও অধিকার লাভ করবে। জামায়াতে ইসলামী ১৮ কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে। অতীতে যারা যখন ক্ষমতায় বসেছে, তারা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িঘর দখল ও লুটপাটের রাজনীতি চর্চা করেছে। জনগণ জামায়াতে ইসলামীর কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে মানুষের ভাগ্যান্নয়নে কাজ করা হবে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কামরাঙ্গীরচর উত্তর থানা আয়োজিত গণমিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই সারাদেশে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি-লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছে তারা ক্ষমতা দখল করতে পারলে পুরো দেশ গিলে খাবে। এরা এখনই নদীর বালু-পাথর খাওয়া শুরু করেছে। যারা দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, লুটপাট, দখলদারিত্বের রাজনীতি চর্চা করে তাদের হাতে দেশ ও জাতি নিরাপদ নয়। এমনকি নিজ দলের কর্মীরাও এদের কাছে নিরাপদ নয়। এরা নিজেরা নিজেদের দলের কর্মীকে পাথর দিয়ে থেঁতলে-থেঁতলে হত্যা করার মতো ঘৃণ্য কাজ করেছে আগামীতের আরো করবে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের বয়কট করতে হবে। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, আল্লাহভীরু দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজমুক্ত নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে। সমাজের নেতৃত্ব তাদের হাতে তুলে দিতে হবে যারা আল্লাহকে ভয় করে, যারা অন্যায়ের কাছে মাথানত করে না, যারা দেশ ও জাতির জন্য ফাঁসির মঞ্চে যেতে দ্বিধা করেনি তাদের উত্তরসূরীদের হাতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ। কারণ তারা আধিপাত্যবাদের কাছে মাথানত করেনি, করবে না।
আসন্ন দূর্গা পূজা ব্যবস্থপনায় নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে আবারও জামায়াতের কর্মীরা পাহারাদারের ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ হলে কোন ধর্মের মানুষ ধর্ম পালনের জন্য রাষ্ট্রের কাছে নিারপত্তা চাইতে হবে না। সমাজের প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীন ও নিরাপদে পালন করতে পারবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে আলাদা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয় কারণ মানুষের তৈরি আইনে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে। মানুষের তৈরি আইনে কেবলমাত্র তারাই সুবিধা পায় যারা আইন তৈরি করে, যারা ক্ষমতাসীন। মানুষের তৈরি আইন জনগণের কোনো কল্যাণে আসেনি, আসবে না। তাই আগামী নির্বাচনে দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলকে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এগিয়ে আসতে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন হবে কেবলমাত্র পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে। এজন্য পিআর পদ্ধতির দাবি আদায়ে তিনি দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কামরাঙ্গীরচর উত্তর থানা আমীর নাজমুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাজী হাফেজ এনায়েত উল্যাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৭ আসনে নির্বাচন পরিচালক আব্দুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।