বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সংস্কারকে প্রত্যাখ্যান করা মানে আবারও ১৫ বছরের অন্ধকারে ফিরে যাওয়া এবং ফ্যাসিবাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া। দুর্নীতিতে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া একটি দলকে আর ভোট দেবে না জনগণ। তার মতে, বিএনপি বড় দল হলেও জনগণের কাছে আর জনপ্রিয় নয়। বর্তমান সময়ে দেশের মানুষের আস্থার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, হত্যা বা লুটপাটের রাজনীতি আর হবে না। সকল দলেরই স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সব ধর্মের মানুষই নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করবেন। আমরা সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরুতে বিশ্বাস করি না। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সুতরাং জামায়াত ক্ষমতা পেলে কাউকে নির্যাতন করা হবে না।
এদেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ দেখবে। যেখানে কোন সন্ত্রাস থাকবে না, কোন দুর্নীতি থাকবে না। কারণ, জামায়াতের দুইজনমন্ত্রী ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন প্রমাণ পাই নি। আর আমাকে গ্রেফতারের পর বার বার চেষ্টা করেও কোন দুর্নীতি পায় নি। পরে দুদক স্বীকার করেছে, তথ্যগত মিসগাইডের কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জামায়াতের ৬২ জন এমপি ছিলেন, কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন প্রমাণ হয় নি এবং মামলাও হয় নি। তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি বৃহত্তম দল ছিল। সেই বিএনপি এখনো জনপ্রিয় হতে পারে নি। আর জনপ্রিয় হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এর প্রমাণ ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন। ইউনিভার্সিটিগুলোর শিক্ষার্থীরা ছাত্রশিবিরকে বেছে নিয়েছে। আগামীর নির্বাচন হবে সত্যের পক্ষের নির্বাচন।
তিনি শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়ন জামায়াত আয়োজিত গুনবতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
গুনবতী ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মোঃ ইউসুফ মেম্বারের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডাঃ মন্জুর আহমেদ সাকি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চৌদগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মু. মাহফুজুর রহমান ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ভিপি শাহাব উদ্দিন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আইয়ুব আলী ফরায়েজী, ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহ, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওঃ মোহাম্মদ ইবরাহীম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক সৈয়দ একরামুল হক হারুন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও জামায়াত নেতা মেশকাত উদ্দিন সেলিম, শিবিরের কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের সাবেক অফিস সম্পাদক আবু সাঈদ মজুমদার, গুনবতী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল হাই, শ্রীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন, কনকাপৈত ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মজুমদার, জগন্নাথদীঘি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইন্জিনিয়ার মজিবুর রহমান, কালিকাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রুহুল আমিন, হেফাজতে ইসলাম গুনবতীর আমীর মাওঃ নিজাম উদ্দিন, গুনবতী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি আবদুর রাজ্জাক শাহীন, সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রতিনিধি বিপ্লব চন্দ্র দাস, গুনবতীর শহীদ সাহাব উদ্দিনের পিতা আবদুল হক, আ’লীগের হামলায় দু’চোখ হারানো শিবির কর্মী জহির উদ্দিন।
জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রমনা কারের স্বত্বাধিকারী রহমত উল্যাহ ফরাজী, আবাবিল হজ্জ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব মোঃ আবু ইউসুফ, কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মু. খাইরুল ইসলাম, সাবেক শিবির নেতা ও অষ্ট্রিয়া প্রবাসী মোঃ শাহাদাত হোসাইন, বাতিসা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক মজুমদার খোকন, শিবির নেতা নাজমুল হক মোল্লা বাদল, দশবাহা মাদ্রাসা মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, জামায়াত নেতা জাফর আহমেদ শিপন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ চৌদ্দগ্রাম সভাপতি কামাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা মাওলানা হামিদুল্লাহ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা দক্ষিণ শিবির সভাপতি রিফাতুল ইসলাম সানি, গুনবতি ইউনিয়ন শিবির সভাপতি নাবিল ফরায়েজী, সাবেক ছাত্র নেতা আবুল হোসেন, আব্দুল আজিজ, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল হামিদ, মাইনউদ্দিন ভূইয়া, রফিকুল ইসলাম মিয়াজী প্রমুখ।
জনসভায় গুনবতী ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ স্হানীয় কয়েক হাজার জনতা উপস্থিত ছিলেন।