আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ভোলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে শহরের নতুন বাজার এলাকায় বিএনপি ও বিজেপি (পার্থ)–এর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিক, পুলিশ সদস্যসহ উভয় দলের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীরের মনোনয়নের পক্ষে নেতাকর্মীরা জেলা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। একই সময়ে নতুন বাজারে জেলা বিজেপি অফিসের সামনে ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর মনোনয়নের সমর্থনে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

একপর্যায়ে বিএনপির মিছিল নতুন বাজারের দিকে অগ্রসর হলে উভয় পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ। সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিএনপি কর্মীদের ধাওয়ায় বিজেপির নেতাকর্মীরা সরে গেলে, বিএনপি কর্মীরা বিজেপির কার্যালয়ের অংশবিশেষ ভাঙচুর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এ ঘটনায় দৈনিক আজকের ভোলা–এর সহ-সম্পাদক সাংবাদিক এম. জিলন, নিউজ২৪–এর ক্যামেরাপার্সন রানা ইসলাম ও এক পুলিশ সদস্যসহ বহুজন আহত হয়েছেন।

জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ ও প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “আমরা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে র‍্যালির প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু বিএনপি পরিকল্পিতভাবে আমাদের অফিসে হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ৩০ জন আহত হয়। বিএনপি ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগিতায় ভোলায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।”

অপরদিকে জেলা বিএনপি তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা অভিযোগ করে জানায়, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রথমে বিজেপি হামলা চালায়।”

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলমসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাৎ মোহাম্মদ হাসনাইন পারভেজ জানান, “সংঘর্ষে বিজেপির ৩০–৪০ জন আহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।”

সংঘর্ষের পর নতুন বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।