রাজনীতি
নৈতিক শিক্ষার অভাবেই মাগুরায় এমন ঘটনা ঘটেছে : ডা. শফিকুর রহমান
সমাজে নৈতিক শিক্ষা নেই বলেই মাগুরায় নিজ আত্মীয়ের হাতে শিশু নিপীড়নের এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যে শিক্ষা নৈতিক শিক্ষা, আমরা সেটিকে সমর্থন করব।
Printed Edition

সমাজে নৈতিক শিক্ষা নেই বলেই মাগুরায় নিজ আত্মীয়ের হাতে শিশু নিপীড়নের এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, যে শিক্ষা নৈতিক শিক্ষা, আমরা সেটিকে সমর্থন করব। ৯১ শতাংশ মুসলমানের দেশে শিক্ষা হতে হবে ইসলামী চেতনার শিক্ষা। এটি ছাড়া সমাজ ভালোভাবে চলবে না সেটি প্রমাণিত। তাই বলতে চাই ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনের মাধ্যমে সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ার জন্য এগিয়ে যেতে চাই। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে প্রথমে শিক্ষার সংস্কার করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে শিক্ষক প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনটি আয়োজন করে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি প্রফেসর ড. এম কোরবান আলীর সভাপতিত্বে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য ও বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ৯টি শিক্ষক পরিষদের সভাপতি যথাক্রমে জিএম আলাউদ্দীন, অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসাইন, অধ্যাপক মনজুরুল হক, অধ্যক্ষ আবদুল আজিজ, অধ্যাপক নুর নবী মানিক, অধ্যাপক ড. মাওলানা শাহজাহান মাদানি, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী, অধ্যাপক ড. উমার আলী। আরো বক্তব্য রাখেন অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক আবদুল মালেক, মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন, কামরুল হাসান মিলন, অধ্যাপক জাহিদ, আজিজুর রহমান সরকার, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ড. আলমগীর , বিশ্বাস, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক নজিবুর রহমান, অ্যাডভোকেট আজমল হোসাইন, আবুর রহিম, অধ্যাপক আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
সমাজের চাকা সৎ পথে চলছে না এমন মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শিক্ষকদের অনুরোধ করব আপনারা মানুষ গড়ার কারিগর তাই এটাকে সৎ ভাবে পালন করেন। তাহলে সমাজের চাকা সৎ পথে চলবে। তবে এখন বলতে পারেন পেটে ক্ষুধা থাকলে কিভাবে এটা করব। আমি বলব এই ক্ষুধা মেটানো জাতির দায়িত্ব। কারণ শিক্ষকদের যদি ন্যায্য দাবি আদায়ে রাজপথে থাকতে হয় তাহলে এটি জাতির জন্য দুঃখজনক। তাই সমাজে আজ আদর্শ শিক্ষকের বড়ই প্রয়োজন। তাহলে আমরা একটি সুন্দর সমাজ পাবো।
তিনি বলেন, আজকের শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন, তাদের ছাত্রদের সামনে, তাদের দাবি আদায়ের জন্য। কারণ শিক্ষকরা যাদের কাছে দাবি আদায়ের জন্য অনুরোধ করছেন, তারাই একদিন এই শিক্ষকদের ছাত্র ছিলেন। তাহলে কেন আজকে শিক্ষকদের তাদের ছাত্রদের সামনে অসহায়ের মত হাত জড়ো করতে হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমীর আরো বলেন, আপনি আজকে যত বড় সচিব, সেনা কর্মকর্তাসহ যেই হন না কেন! একদিন কিন্তু আপনারা এই শিক্ষকদের ছাত্র ছিলেন। তবে আজকে মানুষের মত মানুষ না হয়ে এই দশার কারণ কি? কারণ একটাই শিক্ষাটা ভাল ছিল না। তাই সামনে এই শিক্ষাটাকে ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের যে আন্দোলন সেখানে যত দাবি আসছে সেখানে আমি বলব এত দাবির প্রয়োজন হবে না, যদি আপনারা এখানে দুইটি বিষয়কে আনেন তাহলে সব দাবিই এই দুইয়ের মধ্যে এসে যাবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যে শিক্ষা নৈতিক শিক্ষা আমরা সেটিকে সমর্থন করব। ৯১ শতাংশ মুসলমানের দেশে শিক্ষা হতে হবে ইসলামী চেতনার শিক্ষা। এটি ছাড়া সমাজ ভাল ভাবে চলবে না, যেটি প্রমাণিত। সমাজে নৈতিক শিক্ষা নেই বলেই আজকে মাগুরায় নিজ আত্নীয়ের কাছে শিশুর এমন অবস্থা হয়েছে। এই আত্নীয় বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। তাই বলতে চাই ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনের মাধ্যমে সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ার জন্য এগিয়ে যেতে চাই। আর এই মহান শিক্ষকদের দুর্দশা যেন এই জাতিকে আর দেখতে না হয়। শিক্ষকদের সঙ্গে জামায়াত ইসলাম সব সময় থাকবে।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সেখানে ছাত্ররা অংশ নিলেও শিক্ষকরা তাদের পেছন থেকে সাহস যুগিয়েছেন। তাই বলতে চাই শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড হয় তাহলে শিক্ষকদের অবস্থা আমাদের দেশে এমন কেন? বিগত সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, এমনকি তারা পাঠ্য পুস্তকে সমকামিতার মতো বিষয়ও সংযোজন করেছিল। বিগত সময়ে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বহু চেতনার মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। তবে আমাদের কথা এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ইসলামি চেতনার ভিত্তিতে।তিনি বলেন, শিক্ষকদের দাবি আদায়ের জন্য কেন আজকে তাদের রাজপথে থাকতে হচ্ছে। সরকারের প্রতি আহবান জানাবো শিক্ষকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার শিক্ষকদের চরিত্র হরণ করেছিল। শিক্ষকরা ভোটের সময় ডিউটি করেছিল, তাদের দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার ভোট মিথ্যা গণনা করতে বাধ্য করেছিল।