গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্ট ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী। বৃহস্পতিবার বিকালে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মিছিলটি চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রায় সাড়ে ৯২ হাজার শহিদের মধ্যে শতকরা ৬৮ ভাগ অর্থাৎ তেষট্টি হাজার শহীদের মুসলিম জাতীয়তাবোধের উপর ভিত্তি করেই ১৯৪৭ এর ১৪ আগস্ট আমরা ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা লাভ করি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী ম্যান্ডেট মেনে নিতে অস্বীকার করায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাই ছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য। কিন্তু, দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে ইন্দো-আওয়ামী বয়ান সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্য নষ্ট করা হয়েছে। অবশেষে লগি-বৈঠা তাণ্ডব চালিয়ে ১/১১ অসাংবিধানিক সরকার, ২০০৮ সালে ডিজিটাল কারচুপির অস্বাভাবিক পরিসংখানের নির্বাচন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালে নিশিরাতে ফলাফল তৈরির নির্বাচন আর ২০২৪ সালে আমি-ডামি খেলার নির্বাচন করে ফ্যাসিবাদ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন ছিলো ফ্যাসিবাদের নির্যাতনে পিষ্ট জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিস্ফোরণ। ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের শাহাদাতের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘণ্টা বেজে উঠে। একই দিনে চট্টগ্রামে তিনজন এবং ঢাকার রাজপথে দু’জন শাহাদাত বরণ করেন। জাতি যখন জুলাই বিপ্লবের বার্ষিকী পালন করছে ঠিক তখনই গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পতিত স্বৈরাচারের দোসররা হামলা, হত্যাকান্ড অগ্নিসংযোগ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালায়। এহেন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সেনা-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে পতিত স্বৈরাচারের শেষ চিহ্ন টুকু মিটিয়ে দেয়ায় আমরা বীর জনতা ও সেনা সদস্যদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী জুলাই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ থাকলে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হবে, ইনশা-আল্লাহ্। বৈষম্যহীন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলামী নীতিমালার কোন বিকল্প নেই। আসুন ষড়যন্ত্রকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলি এবং সাত দফা গণদাবিতে ১৯ জুলাই জাতীয় মহাসমাবেশ সফল করি।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, জামায়াত নেতা ফারুকে আজম, ইসমাইল, সিসিএর সভাপতি সেলিম জামান, আ ম ম মসরুর হোসাইন, শহিদ ফারুকের পিতা মোহাম্মদ দুলাল প্রমুখ।