শেখ হাসিনার ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতারা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের শিকার হয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, এটিএম আজহারের মুক্তির মাধ্যমে একজন মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একজন ব্যক্তি অথবা একজন মানুষ কোনোভাবে রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে বিচারের প্রহসনের মধ্য দিয়ে যেন জীবন দিতে না হয় সে বিষয়ে এ রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এনসিপির ‘সংস্কার সমন্বয়ক কমিটি’র আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করার ইতিহাস এর আগে আমরা দেখেছি। জামায়াতের নেতা আজহারকে আপিল বিভাগ খালাস দিয়ে যে মতামত দিয়েছেন, সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে বিচারকে মিসক্যারেজ করা হয়েছে। আজহার সাহেব কে যে আপিল ডিভিশন মুক্তি দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, একজন মানুষ এবং ব্যক্তি তাকে জুডিশিয়ালি লায়াবল করতে হলে, যে ধরনের স্ট্যান্ডার্ড এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেটা হয়নি।

আখতার হোসেন বলেন, হাসিনার আমলের তৈরি করা আদালত বিরুদ্ধমতের ব্যক্তিদের সন্দেহাতীতভাবে তাদের অপরাধকে উত্থাপন করতে গিয়ে, তার ধারে কাছে না গিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের দিকে ধাবিত করেছে। এরকম যেন বাংলাদেশে আর না হয়।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে বিচার কার্যক্রম চলছে, তা হাসিনার আমলের মতো করে নয় বরং সত্যিকারার্থে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে করতে হবে বলে দাবি জানান আখতার হোসেন।

আখতার হোসেন বলেন, সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অর্থ নেই। অর্থবহ সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে স্বৈরাচার ফেরানোর পথ প্রশস্ত হবে। বিদ্যমান সংবিধানে একজন প্রধানমন্ত্রীকে যে পরিমাণ কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে তাতেই একজন প্রধানমন্ত্রী সাংবিধানিকভাবে স্বৈরাচার হয়ে উঠতে পারেন। তাই ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে সংস্কারের বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, শুধু সদিচ্ছা দিয়ে বিদ্যমান আইনি ও সাংবিধানিক কাঠামোয় দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষিত না। যারা সরকার গঠন করে তাদের মর্জি মতো যদি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হয় তাহলে নিয়োগকৃতরা রাজনৈতিক সেবায় মনোযোগ দেবে।

তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকারের ওপর সংস্কার প্রক্রিয়ার দায়িত্ব দিয়ে সংস্কারকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক দল যদি ক্ষমতায় আসার পর জুলাই সনদের ব্যত্যয় ঘটায়, তাহলে জনগণ সেই দলকে প্রত্যাখ্যান করবে।