বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জুলাই সনদ শুধুমাত্র কাগজে নয়, আইনি ভিত্তিতে রূপ দিয়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা এটি ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন পরবর্তী রাষ্ট্র কাঠামোর জাতীয় রূপ রেখার মতোই শুধু এক টুকরো কাগজ হিসেবেই পড়ে থাকবে।
আজ (২৭ আগস্ট) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াত ইসলামী মতিঝিল উত্তর থানার কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই সময়ে নির্বাচন হতে পারে এতে কোন সমস্যা নাই। তবে অবশ্যই সেই সময়ের আগে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে পিআর পদ্ধতি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়ন ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, গত বছরের ৩ আগস্ট ছিল বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে এক কালো অধ্যায়। এদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে রাজপথ রক্তে রজ্জিত করে। রাজধানীর অলিতে-গলিতে লাশের সারি, রক্তের গন্ধ, বুলেটের আওয়াজ, অস্ত্রের মহড়া। এতোকিছুর পরও ছাত্র-জনতা রাজপথ ছাড়েনি। জীবনের মায়া বিসর্জন দিয়ে দেশপ্রেম ধারণ করে দেশ থেকে আধিপাত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে।
ছাত্র-জনতার ৩৬ দিনের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। বিপ্লবী সরকার থেকে বিপ্লবের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় করতেও দীর্ঘ এক বছর লেগে গেছে। কারণ সরকারের ভিতরে ফ্যাসিবাদের দোসর স্তরে স্তরে বসে আছে। সরকারের কাছে জনতার দাবি জুলাই সনদ অবশ্যই আইনি ভিত্তিতে রূপ দিতে হবে এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। স্বদিচ্ছা, আন্তরিকতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও দায়িত্ব বোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এসব দাবি ১ মাসের মধ্যেই নিশ্চিত করা যায়। তাই সরকারকে জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে তিনি আহ্বান জানান।
এসময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মসূচি তুলে ধরে ড. হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেনি। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, কর্মসংস্থান, খাদ্য, বস্ত্রসহ মানুষের যেকোন প্রয়োজনে সবার আগে, সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে; আগামীতেও দাঁড়াবে। জনগণ যদি আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেয় তবে জনগণের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা হবে।
মতিঝিল উত্তর থানা আমীর শামসুল বারির সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা রবিউল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ।