নিজেকে কার্ডিয়াক রোগী উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে বহুল প্রত্যাশিত পরিবর্তন এসেছে। ওই দিন বাংলাদেশের মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে পেরেছে। তিনি বলেন, ‘আমি একজন কার্ডিয়াক পেশেন্ট। সুতরাং আমার যখন অ্যাটাক হয়, স্ট্রেন্থিংটা করার পরে যখন ক্লিয়ার হয়ে গেল আমার, তখন যেভাবে হঠাৎ করে দমটা ফিরে পেলাম, ঠিক আমার কাছে মনে হয়েছে, পাঁচ তারিখে বাংলাদেশের মানুষ হঠাৎ করে বুক ভরে শ্বাস নিতে পেরেছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল প্রাঙ্গণে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, এই মুহূর্তে সমগ্র বাংলাদেশ একটি পরিবর্তন প্রত্যাশা করে। প্রত্যেকটি মানুষ একটি ভালো পরিবর্তন চাইছে। মানুষ চায় সামনের দিনগুলো যাতে ভালো হয়। বাস্তবতা হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু ভালো হবে না, এটি হচ্ছে বাস্তবতা। কিন্তু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উদ্যোগ নিতে হবে।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ বিএনপির কাছে তাদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে। তারা মনে করে, বিএনপি যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে। আগামী দিনে দেশ পরিচালনার সবচাইতে বেশি সম্ভাবনা বিএনপির রয়েছে, অবশ্যই একটি নির্বাচনের মাধ্যমে। সেজন্য বিএনপির কাছে মানুষ ভালো কিছু এবং পরিবর্তনের প্রত্যাশা করে। আমাদের সেই শুরুটা করতে হবে।

দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, একটি কথা প্রচলিত আছে, রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু নিজেদের ভিতরেই প্র্যাকটিস করে না। তারা কেমন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে ? কথাটি ঠিক-বেঠিক দুটোর মাঝামাঝি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো সম্পূর্ণভাবে সেই প্রক্রিয়াটি এখনও চালু হয়ে ওঠেনি। তবে অবশ্যই ড্যাবের এই কাউন্সিলটি প্রমাণ করবে কথাটি সম্পূর্ণভাবে ঠিক নয়।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার বিদায় করে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন। এখন আমাদের নেতাদের দেখানো পথেই সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। গণতন্ত্রের ভিতকে ধীরে ধীরে মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে। এটি বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে, স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত এবং দলের ভেতরেও সকল ইউনিট পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে চেষ্টা করে গড়ে তুলতে হবে। চিকিৎসকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ৩১ দফার মধ্যে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে যে প্রস্তাব রয়েছে, তা বাস্তবায়নে চিকিৎসক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সরকার একা এসব বাস্তবায়ন করতে পারবে না। দলীয় সংসদ সদস্য বা নেতারাও পারবেন না। আপনাদের প্রত্যেকের সহযোগিতা প্রয়োজন। ড্যাবের প্রতিটি সদস্য, প্রতিটি কাউন্সিলরের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ভিসি অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।