নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের আয়োজনে এস.এস.সি/দাখিল ও সমমান পরিক্ষায় জিপিএ ৫- প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ২০২৫ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দানের সময় কেন্দ্রীয় শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন আমাদের উপর অনেক প্রপাগাণ্ডা হয়েছে কিন্তু আমরাই ৫ আগষ্টের পর মন্দির গুলো পাহারা দিয়েছি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগষ্ট) সকালে শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগার মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি অমিত হাসান'র সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি হাফেজ ইসমাঠইল হোসাইন।

ছাত্র শিবিরের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি স্মরণ করছি ২০২৪ এর শহীদদের। শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এবছর ১৯ লক্ষ শিক্ষার্থী থেকে ১৩ লক্ষ পাস করেছে এবং এ প্লাস পেয়েছে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার, এ প্লাস পাওয়ার পর সকল সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬১৪৪৯ টি আসন রয়েছে। অনেকেই তোমার বন্ধু অনেক ভালো পরিক্ষা দিয়েও এ প্লাস পায়নি। তোমরা এ প্লাস পেয়ে অহংকার করোনা। কারন অহংকার তোমাদের পতন ডেকে আনতে পারে। ইবলিশকে অহংকারের জন্য পতনের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এজন্য সর্বত্র শুকরিয়া আদায় করতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ব শীলতার সাথে কাজ করতে হবে। কোনো অর্জনেই আনন্দে উদ্বেলিত হইয়োনা। আবার কোনো খারাপ অবস্থায় হতাশ হইও না। জয় অর্জন করার জন্য আমাদেরকে স্বপ্ন দেখতে হবে। রাসূল স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন পরবর্তীতে ওমর ফারুক (রাঃ) আমলে জয় হয়ছিলো। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমাদেরকে জাগিয়ে তোলা। স্বপ্ন দেখার পর বাস্তবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। ঘুমিয়ে থাকলে চলবেনা। আমরা কখনো হতাশ হবোনা। আমরা সম্ভাবনা ফোকাস করবো। আমরা যদি পরিশ্রম এবং কষ্ট করি তাহলে স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তর করা সম্ভব। আমাদের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ঐসময় বলেছেন, থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখবো এবার জগৎটাকে।

তিনি আরও বলেন,তোমরা অনেক কিছু হতে পারবা। কিন্তু মোরালিটি হতে হবে। তুমি এতো কিছু শিখে যদি মানবতার উপকারে না আনতে পারো, তাহলে সমাজে খতি কারক হবে। আমাদের ও সকল অর্জন মানবতার জন্য করতে হবে।

ডিভাইস আসক্তিতে থাকবা না। আমরা অশ্লীলতা করবোনা, ভুলে জরানো যাবেনা। সচেতন থাকবা। বন্ধু বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভুল করবেনা।

তিনি আরও বলেন, একসময় আল্লাহর রসুলকে অনেকেই পাগল বলতো, কিন্তু তারাই আবার কাছে এসে ধর্ম গ্রহণ করেছে। ছাত্র শিবিরের প্রতি বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা হয়েছে কিন্তু আমরাই ৫ আগষ্টের পর মন্দির গুলো পাহারা দিয়েছি। যখনই আমাদের উপর বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা দিয়েছে, আমরা কাউকেই শত্রু মনে করিনা। পিতা মাতার প্রতি ভালো ব্যবহার সদাচারী হতে হবে,রবের প্রতি সদাচারী হতে হবে, কারন আমাদের সকল কিছু রব দেখেন।আমাদের চুড়ান্ত গন্তব্য হচ্ছে জান্নাতে যাওয়া। আমাদের

মেসেজ হচ্ছে দুনিয়াতে যেভাবে সফল হবো,কেয়ামতের দিনও তোমাদেরকে নিয়ে আমরা জান্নাতে যাবো ইনশাআল্লাহ।

এছাড়া প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার। তিনি বলেন,আমি স্মরণ করি ২৪ এর গনঅভ্যুত্থানে যেসকল ছাত্র শহীদ হয়েছেন।শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে তিনি বলেন গত বছর এভাবে কোনো অনুষ্ঠান হয়নি,বরং শেখ হাসিনা তার দলীয় বাহিনী দিয়ে ২০৪০ এর স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু এতো আয়োজনের পরেও তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু মাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবেনা।যারা দীর্ঘ দিন ক্ষমতা চালিয়েছে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা ছিল না।এজন্য আমাদের দেশ প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। একসময় ছাত্ররা যখন গাড়ির দিকে নজর দিয়েছে, তখন দেখেছে আমাদের প্রায় সকল গাড়ি ফিটনেস বিহীন। ড্রাইভারদের জিজ্ঞেস করলে বলতো হাওয়ার উপর চলে।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রসূলকে এক সাহাবী নসিহত করতে বললেন,তিনি তখন তাকওয়ার উপর নসিহত করলেন।আমাদের এই জীবনে যা কিছু তাকওয়ার উপর হবে পরকালের জীবন জান্নাতি হবে। আবু সাইদ, মুগ্ধ যখন প্রান দিয়ে তোমাদের উপর দেশ অর্পন করেছে,তাতে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের এপিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মডেল কলেজের পরিচালক মুছা কলিমুল্লাহ, সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানভীর, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও স্কলার মাওলানা জামাল উদ্দিন,ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সম্পাদক সিফাত।

উক্ত অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন আদর্শ স্কুলের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহাম্মেদ, দেল পাড়া হাই স্কুলের শিক্ষার্থী রিফাত ফারজানা, দারুন নাজাত মহিলা কামিল মাদ্রাসার কৃতি শিক্ষার্থী মাহাবুবা জান্নাত তানহা।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন

আমজাদ হোসাইন - অফিস সম্পাদক, রায়হান বিন রাফিক- অর্থ সম্পাদক , কামারুল ইসলাম - শিক্ষা সম্পাদক, আল হেলাল - সমাজসেবা সম্পাদক, আব্দুল্লাহ আল মামুন - সাহিত্য সম্পাদক , ওবায়দুর রহমান - প্রকাশনা সম্পাদক আরিফুল ইসলাম - ফাউন্ডেশন সম্পাদক প্রমূখ।