ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, যে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে আমরা এমন নির্বাচন চাই না। আমরা এমন নির্বাচন চাই যে নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। যেনতেন নির্বাচন করে দুর্নীতিবাজদেরকে চাঁদাবাজদেরকে এবং গণবিরোধী মানুষদের পার্লামেন্টে নিয়ে যাবেন এমন নির্বাচন চাই না।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী আন্দোলনের উদ্যোগে শহরের শহীদ মিনারে আয়োজিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এদিন পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার ও খুনীদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এই গণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাই; সেই নির্বাচন হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে। সেই নির্বাচন হতে হবে পিআর পদ্ধতিতে। দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে ভোট হয় না। মানুষ ভোট দিতে পারে না। অবশ্যই নির্বাচন আমাদের জন্য কাঙ্ক্ষিত বিষয়। কিন্তু শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য এত মানুষ রক্ত দেয়নি। শুধু নির্বাচনের জন্য মানুষ অভ্যুত্থান করে নাই। মানুষ জীবন দিয়েছে দেশ গড়ার জন্য। দেশকে মেরামত করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, আমরা যারা সংস্কারের কথা বলছি গুণগত নির্বাচনের দাবি করছি তখন একটি দল বলছে আমরা নাকি নির্বাচন চাই না। যারা সংস্কার চাই না যারা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চাই না যারা দুর্নীতি চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাই না তারা আসলে কোনো পরিবর্তন চায় না। তারা আমরা যারা সংস্কার চাই বিচার চাই এবং সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চাই এবং সত্যিকারের নির্বাচন চাই আমাদের বলছে আমরা নাকি নির্বাচন বিরোধী।
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারা নির্বাচন চায় না; কারা জনগণকে ভয় পায়; কারা সুষ্ঠু ধারার নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এটা দেখতে পেয়েছি দুইটা বিশ্ববিদ্যলয়ের নির্বাচনে। কারা নির্বাচনের জন্য সংকট সৃষ্টি করে। নির্বাচনে তারাই ভয় পায় যারা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে মনে করে জিততে পারবে না।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা প্রশাসন বিএনপির। যদি নির্বাচনে কারচুপি হয়ে থাকে তাহলে পদত্যাগের দাবি করেন। দেশ বিরোধী শক্তিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যাখান করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এমন নির্বাচন চায়, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ মুক্ত এবং পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন হতে। যে দল দশ হাজারেরও বেশি নিজের নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করছে তারা ভুল স্বীকার করেছে। অতীতের নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, কালো টাকা ও পেশিশক্তির সে নির্বাচন মানুষ আর দেখতে চায় না। ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাবি আদায় না হলে ইসলামী আন্দোলনসহ আরো ১৫-১৬ টি দল মিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ঘোষণা দেবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন মাদানী, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটি সম্পাদক মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও জাতীয় ওলামা মাশায়েক আইম্মা পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইসমাঈল সিরাজী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।