শফিকুল ইসলাম, গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ): আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনের নির্বাচনী মাঠ। শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন এ আসনের বিএনপি’র মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী সেদিকেই নজর ভোটারদের। নিজেকে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে দিনরাত মাঠে ঘাটে পথসভা সভা সমাবেশ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির সম্ভ্রাব্য প্রার্থীরা। বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোল, প্রাচীন জনপদ গোমস্তাপুর ও সীমান্ত এলাকা ভোলাহাট এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে মাঠে দৌড়েঝাঁপে রয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী রয়েছে ১জন। তিনি হলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা নায়েবে আমির ডাঃ মুঃ মিজানুর রহমান। তাকে জামায়াত থেকে মনোনয়ন দিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন দলটি অনেক আগেই। তিনিও দিনরাত ব্যাপক গণসংযোগ, পথসভা, মতবিনিময় সভা, বৃক্ষরোপণসহ জনকল্যাণমূলক কাজে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র দলীয় সূত্রে জানা গেছে, “ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন এগারো নেতা। বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি হারুনুর রশিদের সহধর্মিনী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া,তৃণমূল থেকে উঠে আসা এবং যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ন সম্পাদক বিএনপি নেতা আসাদুল্লাহ আহমদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুস সালাম তুহিন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি, সাবেক পৌর মেয়র তারিক আহমদ, গোমস্তাপুর উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সেন্টু, ভোলাহাট উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সুবহান মাষ্টার, বিএনপি’র অন্যতম ও সাবেক ছাত্রনেতা (ভিপি) ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ, বিএনপি’র তরুণ নেতা ড. এস এ অপু, এছাড়াও মনোনয়ন চাচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মঞ্জুর হোসেনের আপন ভাতিজা সৈয়দ আতাউর হোসেন মিলন। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে মতভেদ গ্রুপিং থাকলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাস টার্গেট করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছেন। তবুও বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, এন,সি,পি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও রাজনৈতিক দলগুলো কেউ কেউ পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করছে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশন কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করবেন সেটা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেশের জনগণ বুঝতে পারবে। নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে ভিন্ন মত থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী বাছাই -সহ নির্বাচনী কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে দৈনন্দিন ব্যস্ত সময় পার করছে। পিছিয়ে নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাও। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইতিমধ্যেই ডক্টর মিজানুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। তিনি নির্বাচনী এলাকায় (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) উপজেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ, সভা- সমাবেশ, পথসভা, বৃক্ষরোপন কর্মসূচি, দরিদ্র ও দুস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ,জনকল্যাণমূলক কাজসহ নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে বিএনপি’র বেশ কিছু নেতার নেতৃত্বে ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় লিফলেট বিতরণ করছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল হতে মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক নেতারা নির্বাচনী এলাকায় বিলবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার, লিফলেট, পোস্টার টাঙিয়ে নেতাকর্মী সমর্থক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সমর্থকরা। মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাওয়া নেতারা ব্যাপক গণসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজে নিজে সবাই আশাবাদী, এখন দেখার বিষয় কে পাবেন বিএনপির মনোনয়ন। এদিকে সাধারণ ভোটারেরা কিছু প্রার্থীর সফলতা কামনা করেন এবং উচ্চ শিক্ষিতরা রাজনীতিতে এগিয়ে আসছে বলে তারা মনে করেন এটা আমাদের দেশের জন্য শুভ লক্ষণ।