ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, আমরা মুসলমান। এটা আমাদের গর্বিত আত্মপরিচয়। আমরা সাম্প্রদায়িক না। বরং সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলাম একটি পরীক্ষিত ব্যবস্থা। ইসলাম রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে এমনকি প্রাণ-প্রকৃতিও ন্যায় সংগত আচরণে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। তাই জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে হলে ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিতেই হবে।

আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে টিএসসি অডিটোরিয়ামে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।

তিনি বলেন, বর্তমানে আত্মপরিচয়ের সংকট চলছে। বিশেষ করে মুসলমানদেরকে তাদের আত্মপরিচয় নিয়ে হীনমণ্য করে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মার্ক্সবাদ, মাওবাদ নিয়ে গর্ব যদি শ্লোগান উঠতে পারে তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে শ্লোগান তুলতে দ্বিধা কোথায়? পোশাকের স্বাধীনতার নামে শর্ট পোষাকে গর্ববোধ করা গেলে ইসলাম মান্য করে শালীন পোষাক পরিধান করতে দ্বিধা কেন আসবে। তাই আমাদের প্রধান পরিচয় আমরা মুসলিম। দল-মতের উর্ধে আমাদের মুসলিম পরিচয়কে বড় করে তুলতে হবে।

দেশের প্রধান সমস্যা হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করে শায়খে চরমোনাই বলেন, দুর্নীতি করে শিক্ষিতজনেরা। মানে আমাদের দেশে শিক্ষা আছে কিন্তু সেই শিক্ষা আমাদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে তৈরি করছে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই শিক্ষা ব্যবস্থা ও রাজনীতি আমাদের তরুণ মেধাবীদেরকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে। আবরার ফাহাদকে যারা হত্যা করেছে তারা সবাই মেধাবী কিন্তু অসৎ সঙ্গের কারণে তারা খুনিতে পরিনত হয়েছে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মু. আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম অপু এবং এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব জহিরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছাত্রনেতা মুন্তাসির আহমদ।

মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ৪৭ না হলে কোনভাবেই ৭১ এ আমাদের স্বাধীনতা আসতো না। কাশ্মীর ও হায়দারাবাদ আজো স্বাধীনতা পায় নাই। আমরা ৪৭ এর স্বাধীনতায় প্রধান ভুমিকা পালন করেছি। একাত্তরেও মানুষ ইসলামকে ধারণ করেই স্বাধীনতা এনেছে। চব্বিশেও আমরা সামনে থেকে লড়াই করেছি। ফলে তোমার মুসলিম পরিচয়কে বড় করে তুলতে হবে। গৌরবের সাথে মুসলিম পরিচয় ঘোষণা করতে হবে।

দুপুর ২টা থেকে নবীনবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। নবীনদেরকে নানা উপহারে বরণ করে নেন ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দিনসহ ঢাবি নেতৃবৃন্দ। আছরের পর থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। জাতীয় সংস্কৃতিক সংগঠন কলবরসহ দেশের শীর্ষ সাংস্কৃতির সংগঠনসমূহ অংশ নেয়।

সম্মেলন থেকে আগামী ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্যানেল পরিচিতি তুলে ধরা হয়। ইয়াসিন আরাফাতকে ভিপি, খায়রুল আহসান মারজানকে জিএস এবং সাইফ মুহাম্মাদ আলাউদ্দিনকে এজিএস প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই।