আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লবসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত সকল হত্যা-নির্যাতনের বিচার অবশ্যই করবে বলে জানিয়েছেন তারেক রহমান। গতকাল রোববার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক শোরে ‘বিএনপি আমার পরিবার’ এর উদ্যোগে গুম-খুন-হত্যা-নির্যাতনে পরিবারের সদস্যদের সম্মানে দেয়া এক ইফতার অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আগামী দিন যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন, এদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব যে রাজনৈতিক দলই পাক না কেনো তাদের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অবশ্যই একটি কর্মসূচি থাকতে হবে সেটি হলো, যে মানুষগুলো এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, যে পরিবারগুলো তাদের সদস্যদেরকে হারিয়েছে অথবা নির্যাতিত হয়েছে, যে পরিবারের সদস্যরা তাদের ওপরে যে অন্যায় করা হয়েছে আগামী দিনে যে জনগণের নির্বাচিত সরকারে যাবেন তাদেরকে অবশ্যই এই যে অন্যায় হয়েছে, সেই অন্যায়ের বিচারগুলো করতে হবে।
তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে সুষ্ঠুভাবে এই বিচার হতে হবে। কারণ আগামী দিনে আমরা যদি অন্যায়ের বিচারগুলো করতে না পারি, অন্যায়ের সঠিক সুষ্ঠু বিচার যদি না হয় হয়তোবা দেশে আবারও অন্যায় সংঘটিত হতে পারে।
তারেক রহমান বলেন, এসব অন্যায়ের বিচার হওয়ার মাধ্যমে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ন্যায়বিচার দেবার মাধ্যমে সমগ্র দেশের কাছে, দেশের মানুষের কাছে এটি প্রতিষ্ঠিত করা খুবই জরুরি যে, অন্যায়কারী অন্যায়কারী এবং যে অন্যায় করবে, ন্যায়ের বিরুদ্ধে যে যাবে তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের দলের অবস্থান থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি যে, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি- তাকে যদি বাংলাদেশের মানুষ আগামী দিনে সুযোগ দেয় দেশ পরিচালনার তাহলে অবশ্যই বিএনপির যেসকল রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে সেই কর্মসূচিগুলোর পাশাপাশি অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে যে, বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, একই সাথে জুলাই-আগস্ট মাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, যারা শহীদ হয়েছেন, বিভিন্নভাবে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে সেই হত্যাগুলোর বিচার ইনশাল্লাহ অবশ্যই আমরা করব।
নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা দয়া করে হতাশ হবে না, আশা রাখবেন। আমরা এতোটুকু যখন এসেছি, ইনশাল্লাহ আমরা সামনের পথটুকু পাড়ি দিতে সক্ষম হবো। আমরা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি, আমরা যদি সকলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকি অবশ্যই আমরা সক্ষম হবো এই অন্যায়ের বিচার করতে। আমি মনে করি, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পক্ষে যতগুলো দল আছে সবগুলো দল এর সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন না। সকলে নিশ্চয়ই কয়েকটি- যে কয়েকটি বেসিক ব্যাপার আছে.. বাংলাদেশের গণতন্ত্র, গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং নির্যাতিত ব্যক্তিবর্গের প্রতি ন্যায়বিচার করা- একরকম যে বিষয়গুলো আছে আমরা সকল গণতন্ত্রের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলগুলো আমরা নিশ্চয় এই ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ থাকব, নিশ্চয়ই এব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকবে না।
জনগণের ‘আকাক্সক্ষা’ বাস্তবায়ন হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করি, প্রত্যাশা রাখি ইনশাল্লাহ যে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাইছি, আগামী দিনে যেন আমরা সেই প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে সক্ষম হই।
বিএনপি আমার পরিবার’ সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাতসহ ফ্যাসিস্ট পতন আন্দোলনে গুম-খুন-হত্যা এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।