অবিলম্বে ইসরায়েলের হামলা বন্ধ করে আল আকসা মসজিদের মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, মুসলিম বিশ্বের হৃদয় আল আকসা মসজিদ বর্তমানে ভয়াবহ আগ্রাসনের শিকার। এই পবিত্র ধর্মীয় স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা স্পষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধ। ফিলিস্তিনসহ মুসলিম উম্মাহর আত্মিক অংশ এটি। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা শুধু একটি ভূখন্ডর ওপর নয়, বরং সমগ্র মুসলিম বিশ্বের প্রতি চরম অবমাননা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে গাজায় ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসনলামীর উদ্যোগে নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এই মানবতাবিরোধী কর্মকান্ড বন্ধে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মুসলিম দেশগুলোর প্রতি একত্রিত হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিবাদ জানাতে হবে। তিনি ইসরায়েলি পণ্য বর্জন এবং যে সব দেশ ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে সে সব দেশকে বয়কট করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস পৃথিবীব্যাপী পরিচিত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিন্দা প্রস্তাব জানাবেন ও বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনের গাজায় জনগণের উপর এই গণহত্যার বিচারের ব্যবস্থা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, জেলা সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, ইসলামীর ছাত্রশিবিরের মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মিম মিরাজ হোসাইন, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান ও সেক্রেটারি মো. আব্দুস সালাম, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মাওলানা জাহিদুর রহমান নাঈম, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, দৌলতপুর থানা আমীর মাওলানা মুশাররফ আনসারী, এডভোকেট আওসাফুর রহমান, এডভোকেট শেখ জাকিরুল ইসলাম, মো. হুমায়ুন কবীরসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে নেতানিয়াহু বাহিনীর বর্বর হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৬৯৫ জন এবং এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন আহত হয়েছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষে পূর্ব-আলোচনা অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি এখনো শুরু হয়নি। হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে হয়নি কোনো ঐক্যমত্য। যার ফলে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজার বিভিন্ন অংশে হামলার মাত্রা বড় আকারে বাড়িয়েছে ইসরায়েল, যার বড় একটি অংশ দক্ষিণ গাজার রাফা শহরকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে। কার্যত নিশ্চিহ্নের পথে রয়েছে এই গুরুত্বপূর্ণ শহরটি। কার্যত দক্ষিণ গাজার রাফা অঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় 'পরিপূর্ণ মানবিক বিপর্যয় ও বড় আকারে ধ্বংসযজ্ঞ দেখা দিয়েছে, যা জীবনযাপনের সব ধরনের প্রক্রিয়াকে স্থিমিত করেছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী রাফা গভার্নোরেটের ৯০ শতাংশ বাড়ি, রাফার ২৪টি সুপেয় পানির কুপের মধ্যে ২২টিই ধ্বংস, পয়নিষ্কাশন নেটওয়ার্কের ৮৫ শতাংশ অকেজো, আটটি স্কুল ও শিক্ষাভবন ধ্বংস, ১২টি মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ এবং ম্যাটারনিটি হাসপাতাল ও ইন্দোনেশীয় হাসপাতালও ধ্বংস করা হয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলা কোন মুসলমান মেনে নিতে পারে না। জুলুম করে পৃথিবীর বুকে কেউ টিকে থাকতে পারেনি। সাধারণ মুসলমানদের যার যার অবস্থান থেকে এই জালেমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ফরয হয়ে গেছে। জাতিসংঘ ও ওআইসি সহ সবাইকে জালেম ইসরাইলকে কঠোর হস্তে দমনের আহ্বান জানান।