মুক্তিকামী মানুষ সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি একথা বলেন। কর্মসূচিতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই মাজারে আমরা শপথ নিয়েছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অক্ষুণœ রাখবার জন্য আমাদের যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রাম সবসময় অব্যাহত থাকবে। আমরা শপথ নিয়েছি, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য আমরা যে সংগ্রাম করেছি লড়াই করেছি, করছি এগুলো আমরা অব্যাহত রাখবো।
মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অত্যন্ত প্রহরী, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য যিনি নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, সেই মহান নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অসুস্থ অবস্থায় আছেন। আমরা তার রোগ মুক্তির জন্য দোয়া চাইছি।
তারেক রহমানের আগমনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই আরও বেগবান হবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করছি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। তার আগমনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই আরও বেগবান হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধে আমরা এই মাসের ১৬ তারিখে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিলাম। এজন্যই এই দিনটি আমাদের কাছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, একাত্তরে স্বাধীনতার শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। স্বাধীনতাকামী মানুষ তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়ে অবশ্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অটুট রাখবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে ইনশাল্লাহ।
বিজয় দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে থেকে নেতা-কর্মীরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও সালাম লও সালাম’, স্বাধীনতা এনেছি, স্বাধীনতা রাখব’ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে শেরে বাংলা নগরে মাজারস্থলে সমবেত হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে দলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অপর্ণ করে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
ছাত্রদলের র্যালি : এদিকে গতকাল বিকেলে রাজধানীতে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্রদল। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পতাকা মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি পুরানা পল্টন, জাতীয় প্রেসক্লাব, দোয়েল চত্বর, টিএসসি হয়ে শাহবাগে এসে শেষ হয়। মিছিলে ছাত্রদলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মহানগরসহ অন্যান্য ইউনিটের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। ‘বিজয়ের পতাকা মিছিল’ শেষে রাকিবুল ইসলাম বলেন, যারা দিল্লি ও পিন্ডির রাজনীতি করতে চায়, বিজয়ের পতাকা মিছিলের মধ্য দিয়ে তাদের লাল কার্ড দেখিয়েছে ছাত্রদল। এই মিছিল প্রমাণ করেছে, ছাত্রদল সব অপশক্তির বিরুদ্ধে এককভাবে সংগ্রামে সক্ষম। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা হাতে পতাকা, মাথায় ব্যান্ড, গায়ে ছাত্রদলের দলীয় ও ধানের শীষের লোগোসংবলিত ব্যাজ পরে মিছিলে অংশ নেন। কয়েকজন মিলে বড় পতাকা ধরে মিছিলে হাঁটেন। বিজয়ের পতাকা মিছিলে ‘ষড়যন্ত্র হয়নি শেষ, সজাগ থাকো বাংলাদেশ’, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, সবার আগে বাংলাদেশ’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।