নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের একটি সংসদীয় আসন কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করায় ফুঁসে উঠেছে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণ। আসন কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা।পরে সংবাদ সম্মেলন থেকে নির্বাচন কমিশনের বাগেরহাটের একটি আসন কমানোর প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আগামী দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে রাজনৈতিক দলগুলো। কমিশন অবিলম্বে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আগামীতে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনগুলো।

বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকারাম হোসেন তালিম সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর আগে তারা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সর্বদলীয় সভা করে নির্বাচন কমিশনের আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় ও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-কৃষিবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান, বাগেরহাট জেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক এম এ এইচ সালাম, সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম, জামায়াতে ইসলামীর জেলা নায়েবে আমীর এ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ,জেলা সেক্রেটারি শেখ মোঃ ইউনুস সহ ইসলামী আন্দোলন, খেলাফতে মজলিস,জাসদ সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

বুধবার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাগেরহাটের আসন কমিয়ে আনার খসড়া অনুমোদনের ঘোষণার খবর আসার পরই ফুঁসে ওঠে বাগেরহাটের মানুষ।তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বুধবার রাতেই রাজপথে নেমে আসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা, এ সময় তারা নির্বাচন কমিশনের বাগেরহাটের সংসদীয় আসন কমানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানায়।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকারাম হোসেন তালিম বলেন, বাগেরহাট জেলায় চারটি সংসদীয় আসন ছিল। এই চারটি আসন থেকে একটি বাদ দিয়ে তিনটি আসন করার প্রস্তাবনা নির্বাচন কমিশন দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসির এমন সিদ্ধান্ত জানার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সর্বদলীয় সভা করে আগামী দুইদিন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করছি। আগামী শনি ও রবিবার বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের শহরের দশানী ট্রাফিক মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে এবং রবিবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করা হবে। দাবি মেনে না নেওয়া হলে আগামীতে আবারও রাজপথের নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, ১৯৭০ সালের পর থেকে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে। বাগেরহাট ঐতিহাসিক জেলা। বাগেরহাটে বিশ্ব ঐতিহ্য ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ, ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্র বন্দর রয়েছে। এটি একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। জাতীয় অর্থনীতিতে এই জেলা ভূমিকা রেখে চলেছে। নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি বাদ দিয়ে দেওয়ায় বাগেরহাটের লক্ষলক্ষ মানুষ ফুঁসে উঠেছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, আগুন নিয়ে খেলার শামিল। তারা তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে বৃহত্তর কর্মসূচি দিয়ে বাগেরহাটকে অচল করে দিয়ে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন এই নেতা।এ সময় উপস্থিত জামায়াত ও বিএনপির অন্যান্য নেতারা বলেন, আমরা বাগেরহাটের একটি আসন বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে আসন বহালের দাবিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ। এখানে কোনো মতপার্থক্য থাকবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে সোচ্চার থাকার ঘোষণা দেন।