ইবরাহীম খলিল ও সেলিম উদ্দিন নিজামী : যুবকদের নতুন বাংলাদেশ বির্নিমানে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, হে যুবক এগিয়ে আসো আমিও তোমাদের সাথে আছি পাকা চুল-দাঁড়ি এবং ভ্রু নিয়ে। দেশ গড়ার মিছিলে আমিও সামনের সারিতে থাকবো। নতুন করে কোরআনের দেশ গড়তে পারে এমন যুবক তৈরির জন্য মা-বোনদের প্রতিও উদাত্ত আহ্বান জানান ডা. শফিকুর রহমান।
আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লক্ষ্মীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী আদর্শ সামাদ সরকারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বিশাল গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাস্টার রুহুল আমীন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, কুমিল্লা মহানগরী আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।
এর আগে রায়পুর পৌরসভা আমীর হাফেজ ফজলুল করীমের অর্থসহ কোরাআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে গণজমায়েতের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
জেলা সেক্রেটারি ফারুক হোছাইন নূরনবীর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ও ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ডা. আনোয়ারুল আযিম, ফেনী জেলার সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলার সাবেক আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য মাওলানা আলা উদ্দিন, ফেনী জেলা আমীর মুফতি আবদুল হান্নান, লক্ষ্মীপুর জেলা নায়েবে আমীর এডভোকেট নজির আহমাদ, জেলা নায়েবে আমীর এ আর হাফিজ উল্লাহ, নোয়াখালী জেলার নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়্যেদ আহমদ, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দিন মাহমুদ, এডভোকেট মুহসিন কবির মুরাদ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, লক্ষ্মীপুর পৌরসভা আমীর এডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান, লক্ষ্মীপুর শহর শাখা শিবিরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষ্যে পুরো লক্ষ্মীপুর জেলাজুড়ে দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়। সকাল বেলাতেই গণজমায়েতের মাঠ উপচে আশপাশের অলিগলি মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। দুপুরে দিকে পুরো লক্ষ্মীপুর শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়। আশপাশের ভবনের ছাদে উঠে মানুষ ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে দেখা যায়। শহরজুড়ে মানুষের মিছিল আর নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে মুখরিত হয়।
অবিলম্বে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দাবি করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যে দলের বেশি সংখ্যক শীর্ষনেতাকে খুন করা হয়েছে, সেই দলের নাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এক এক করে ১০ জনকে খুন করেছে। আল্লাহ একজনকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তিনি আমাদের ভাই এটিএম আজহারুল ইসলাম। আফসোসের বিষয় ৬টি মাস চলে গেল, বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদীদের তাড়ালো। কিন্তু ফ্যাসিবাদের বোঝা এটিএম আজহারুল ইসলামের ঘাড়ে এখনো রয়েই গেল। এক এক করে জাতীয় নেতৃবৃন্দ সবাই বের হয়ে আসলেন, এখনো এটিএম আজহারুল ইসলাম থেকে গেলেন অন্ধকার প্রকোস্টে কারাগারে। তাই সেদিন মনের কষ্ট নিয়ে বলেছি আজহার ভাইকে ভেতরে রেখে আমি আর বাইরে থাকতে চাই না। আমি সরকারকে অনুরোধ করছি আগামি ২৫ তারিখ নিজেকে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়ে বলবো, আমাকে গ্রেফতার করুন এবং আমাকে কারাগারে পাঠান। যেদিন আজহারুল ভাইয়ের মুক্তি হবে তার পরের দিন আমাকে মুক্তি দিয়েন।
জামায়তের আমীর বলেন, আমাদের সন্তানের বিশাল একটি স্বপ্ন নিয়ে তারা জীবন দিয়েছিল। তারা বুক পেতে বলেছিল বুকের ভেতর তুমুল ঝড় বুক পেতেছি গুলি কর। কি সেই ঝড়। সেই ঝড় ছিল সমাজের অন্যায় অবিচার দুর্নীতি এবং দু:শাসন। কোন যুগেই যুবকেরা দুর্নীতি এবং দু:শাসনকে সমর্থন করে না। বরঞ্চ তার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। তরুণদের এত ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এলো। এরপর মনে হয় লক্ষীপুরে চাঁদাবাজি নাই। সবাই সমস্বরে জানান দেয় চাঁদাবাজি আছে। এসময় তিনি বলেন, বিনয়ের সাথে বলি দয়া করে চাঁদাবাজি দখলবাজি বন্ধ করেন। দয়া করে মানুষের ওপর জুলুম করবেন না।
শান্তিপূর্ণ শাসনব্যবস্থার উদাহরণ টেনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর বলেন, দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র ছিল মদিনা কেন্দ্রিক রাষ্ট্র। সর্বশ্রেষ্ট শাসক ছিলেন মুহাম্মাদুর রাছুল্লাহ (সা.)। তিনি একটা আদর্শের ভিত্তিতে শাসন করেছিলেন। আদর্শটা ছিল আল কোরআনের আদর্শ। ইসলামের আদর্শ। আল্লাহর দেওয়া আদর্শ। তিনি যে আদর্শে দেশ শাসন করার কারণে একটি জাহেলী সমাজ পরিবর্তন হয়ে সোনালি সমাজ হয়ে গেল, সেই আদর্শকে যদি আবার আমাদের সমাজে গ্রহণ করে নেই, বাংলাদেশের সমাজও সোনালি সমাজে পরিণত হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে শশ্বান বাংলা কায়েম করা হয়েছে। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, এক মাত্র কোরআন-ই সোনার বাংলা দিতে পারে। আর কিছুই দিতে পারবে না।
তিনি বলেন ইতিমধ্যে বাংলার জমিনে সব পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ। এখন হবে ইনশা আল্লাহ কোরআনের বাংলাদেশ। যারা কোরআনকে খন্ডিত করতে চান অথবা সহ্য করতে চান না, তাদেরকে আমরা বিনয়ের সাথে বলতে চাই, এদেশের আপামর জনতা বাঁচতে চায় কোরআন বুকে নিয়ে। মরতেও চায় কোরআন বুকে নিয়ে। আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চায় কোরআন বুকে নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে যতগুলো ইসলামী দল আছে সবগুলোর দিকে আপনারা তাকিয়ে দেখুন ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে শুরু করে ২২ ফেব্রয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত এই সামান্য পরিক্রমায় কোথাও দেখবেন না ইসলামী দলের কোন লোক এখন জাতির ওপর জুলুম করছে। চাঁদাবাজি করছে কিংবা দখল বাণিজ্য করছে। এর একমাত্র কারণ তারা কোরআনকে সম্মান করে এবং বুকে ধারণ করে। তারা আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালাকে ভয় করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২৪ সালের ৫ আগস্ট যুবকদের ভূমিকার প্রসংশা করে বলেন স্যালুট যুবক তোমাদের। তোমাদের জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ের কারণে আল্লাহ আমাদেরকে মুক্তকরে দিয়েছেন। তোমরা আবার চিরমুক্তির জন্য জেগে ওঠো। এবার শপথ নাও আমরা কোরআনের আলোকে গড়বোই গড়বো ইনশা আল্লাহ। আমিও তোমাদের সাথে চুল পাকা, দাড়ি পাকা এক যুবককে পাবা। লড়াইয়ের ময়দানে তোমাদের সাথে আমাকে পাবা। মিছিলের পেছনে নয় সামনের কাতারে থাকবো ইনশা আল্লাহ।
তিনি বলেন আমাদের যুবকেরা আমাদের স্বপ্ন। আমাদের যুবকেরাই আমাদের বাংলাদেশ। এই যুবকদের হাতে বাংলদেশের দায়িত্ব তুলে দিতে চাই। হে যুবকেরা তোমরা তৈরি হও। ইনশা আল্লাহ তোমরা পারবে। অতীতে তোমরা পেরেছো আমরা তোমাদের বুকে আলিঙ্গন করে কপালে চুমু দিয়ে এগিয়ে দেবো ইনশা আল্লাহ।
তিনি মা-বোনদের বলেন, আপনারা যুবকদের আজ থেকে তৈরি করুন। আল্লাহর কাছে তৌফিক চাই, এদের ইজ্জত দিয়ে রাখতে চাই। শান্তি নিয়ে বাঁচতে চাই নিরাপত্তা নিয়ে বাঁচতে চাই। এজন্য আমাদের সন্তানদের ওয়াকফ করে দিলাম। আমি আজকে বাংলাদেশের এবং বিশ্বের মায়েদের কানে কানে বলতে চাই ও আমার শ্রদ্ধাভাজন মা। আমি বিনয়ের সাথে অনুরোধ জানাচ্ছি, সেজদায় পরে এমন মুজাহিদ সন্তানদের জন্য তৌফিক চান।
লক্ষ্মীপুর জেলার সম্ভবনার কথা তুলে ধরে জামায়াতের আমীর বলেন, লক্ষ্মীপুরকে ফুলের বাগান বানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু এই লক্ষ্মীপুরকে ছোপ ছোপ রক্ত আর কাড়ি কাড়ি লাশ দিয়ে সাজানো হয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫ আগস্ট। কিন্তু আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন একদিন আগে ৪ আগস্ট। এটা বিনা মূল্যে নয়। অতি উচু মুল্যে। তিনি বলেন, ইনসাফের বাংলাদেশ মানবিক বাংলাদেশ এবং কোরআনের বাংলাদেশ কায়েমের মধ্য দিয়ে লক্ষ্মীপুর বাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাদের সাথে থাকবো, তাদের বুকের ভেতরে থাকবো।

আওয়ামী লীগের দু:শাসনের কথা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একটি গোষ্ঠী লক্ষ্মীপুরকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছিল। বিশেষ করে একটি কুখ্যাত পরিবার আপনারা তাদের সবাইকে চিনেন জানেন। এই সন্ত্রাসীরা আমার ভাই ডা. ফয়েজ যাকে বলা হতো মানবিক চিকিৎসক, তাকেসহ অসংখ্য দেশপ্রেমিক মানুষকে তারা খুন করেছে। যতদিন তারা ক্ষমতায় থাকে ততদিন তারা রাজা। আর যখন ক্ষমতা হারায় তখন তারা গর্তের ইঁদুর। আসুন আমরা এমন জীবন গঠন করি যে জীবন সর্বাবস্থায় সম্মানের হয়। ফাঁসির রশিতে ঝুললেও সম্মানে হয়। আবু সাঈদেও মতো বুক পেতে গুলি নিলেও যেন আনন্দের হয়।
মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, ইসলাম কায়েম হলে সবাই তার ন্যায্য অধিকার পাবে। মহানবীর আমলে বেকার ছিল না, সন্ত্রাস ছিল না, শান্তির সমাজে পরিণত হয়েছিল খুলাফায়ে রাশেদার আমলে। বাংলাদেশেও ইসলাম কায়েম হলে অন্যায়-অনাচার থাকবে না। আমরা সেই ইসলাম কায়েম করতে চাই। সেজন্য জামায়াত কর্মীকে আখলাক গড়ে তুলতে হবে। মানুষের প্রতি দরদ ভালবাসা বাড়াতে হবে। দারিদ্রমোছনে এগিয়ে আসতে হবে। ন্যায়বিচার করার ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে। দক্ষ হতে হবে, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হবে। কোরআন ও সুন্নাহ বেশি বেশি অধ্যয়ন করতে হবে। দাওয়াত দিয়ে গণজোয়ার তৈরি করতে হবে। মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে হবে। প্রচলিত ভুলক্রটি থেকে যোজন যোজন দূরে থাকতে হবে। তিনি বলেন, আদর্শবান নারী-পুরুষ তৈরি করতে হবে, যাতে চরিত্র দেখেই মানুষ ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হবে। তিনি আগামিতে ৫ আগস্টের চেয়ে আরও বড় আরেকটি বিপ্লবের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান।
মোবারক হোসেন বলেন, ২৪ এর গণ আন্দোলনের পর মনে করেছিলাম বর্তমান সরকার ভালভাবে দেশ চালাবে। আমরা কি দেখলাম, এখনো দেশে চাঁদাবাজী, দখলবাজী বন্ধ হয়নি। নিশ্চয় সরকার জানে কারা চাঁদাবাজী করছে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই। জামায়াতে ইসলামী ১০ দফা কর্মসূচিতে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন চেয়েছিলো। আপনারা আওয়াজ তুলুন আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি কায়েম করতে হবে। ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে জামায়াতে ইসলামীকে সংসদে যেতেই হবে জানিয়ে মোবারক হোসেন বলেন, আপনারা দিনরাত কাজ করুন। আল্লাহ তায়ালা মদদ করবেনই।
কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যাচার করেছে। আমাদের নেতৃত্বকে শহীদ করেছে। সকল হত্যাকান্ডের বিচার চাই। করতে হবে। একটি দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ চাই। ইসলামকে আমাদের অনুসরণ করতেই হবে। তাহলে ক্ষুধা দারিদ্র ফ্যাসিবাদ আর থাকবে না। এখানে আর কোন ফ্যাসিবাদ চাই না। ফ্যাসিবাদ থাকতে পারবে না।
ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, আজকের মহাসমুদ্র প্রমাণ করে জামায়াতকে নির্যাতন করে দমন করা যায়নি। শেখ হাসিনা দুটি প্রতিশোধ নিয়েছে। ২৮ অক্টোবর পল্টন ময়দানে হত্যা করেছে। শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যা করেছে। পিলখানায় সেনা অফিসার হত্যা ও জামায়াতে নেতাদের হত্যা করেছে। খুনিদের এদেশে ঠাঁই হবে না। তিনি বলেন, সারাদেশে আগামি দিনের ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনে উজ্জীবিত করেছেন আমীরে জামায়াত। আজ সারাদেশে স্লোগান উঠেছে সব দল দেখা শেষ, জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ। তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে দেরি হলে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে উঠবে বলেও হুশিয়ারি দেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের উন্নয়নে রেললাইন, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিমানবন্দর তৈরির দাবি জানান।
এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের সব চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। জুলাই আগস্টে পাখির মতো গুলি চালিয়ে ২ হাজার ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। অবশেষে ৪০ মিনিটের ব্যবধানে হাসিনা পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী দল। নতুন বাংলাদেশে আর কোন ফ্যাসিবাদের ঠাঁই হবে না। তিনি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি এবং জামায়াতের প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আরমান হোসেন বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যূত্থান ছিল বৈষম্যবিরোধী দেশ গঠনের জন্য। আজ আমরা সংস্কারের জন্য কথা বলছি। কিন্তু কেউ কেউ আজ নির্বাচনের তসবিহ জবছে। তাদের কথায় মনে পড়ে যায় ৭১ সাল পরবর্তী ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা। আবার আমরা নব্য ফ্যাসিস্টদের উত্থান দেখতে পাচ্ছি। তাদের বলতে চাই আবার কোন ষড়যন্ত্র হলে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে তাদেরও উৎখাত করবো ইনশা আল্লাহ।
শহীদ ডাক্তার ফয়েজ আহমদের ছেলে ডাক্তার হাসানুল বান্না বলেন, আওয়ামী লীগ এই অঞ্চলকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছিল। সন্ত্রাসীদের বলতে চাই লক্ষ্মীপুরকে আর সন্ত্রাসের জনপদ বানাতে দেবো না।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান পরিষদ নেতা এডভোকেট প্রিয়লালনাথ বলেন, ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। যারা ইসলামপ্রিয় তারা ধর্ম বিরোধী আচারণ করতে পারে না। কোন ধর্মই এটা মনে করেনা যে অন্য ধর্মের মানুষকে অত্যাচার করা যায়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজ্জ থেকে আমরা এই শিক্ষা পেয়েছি। এই সমাবেশ সফল হউক, সার্থক হউক।
লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, বিএনপি- জামায়াতের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা করা হয়েছে। আমরা মাথা নত করি নাই। আমরা লড়াই করেছি ফ্যাসিবাদ তাড়ানোর জন্য। আদর্শ ভিন্ন থাকতে পারে। কিন্তু স্বৈরাচার যেন দেশের ফিরতে না পারে সেজন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো।
ডা. আনোয়ারুল আযিম বলেন, লক্ষীপুর ৫২’র আন্দোলন এবং স্বাধীনতার অগ্রনায়ক লক্ষ্মীপুরের কৃতি সন্তান। লক্ষ্মীপুরকে সারাবিশ্বের মধ্যে সেরা করতে চাই। আসুন আমরা লক্ষ্মীপুরকে এমনভাবে গড়ে তুলি যাতে সমৃদ্ধশালী এলাকায় পরিণত হয়।