হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সাবেক আমীর জননন্দিত নেতা শাহজাহান চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার এক ব্যতিক্রমধর্মী ব্যক্তিগত সফরে হাটহাজারীতে আগমন করেন। এ সফর কোনো সাংগঠনিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং একান্ত পারিবারিক ও সামাজিক প্রয়োজনে তিনি হাটহাজারী এলাকা পরিদর্শনে আসেন।

সফরের শুরুতেই তিনি হাটহাজারীর নুর মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নানুপুর মাদরাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা সালাউদ্দিনের ছেলের আকদ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিয়ের আকদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাটহাজারী মাদরাসার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা শেখ আহমদ। অনুষ্ঠানে হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা খলিলসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামা, মুহতামিম ও মুহাদ্দিসগণ উপস্থিত ছিলেন।

আকদ অনুষ্ঠানের শুরুতে বরের পিতার অনুরোধে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন শাহজাহান চৌধুরী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি যখন কারাবন্দী ছিলাম, তখন হাটহাজারীর বহু আলেম-ওলামা আমার সঙ্গে কারাভোগ করেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে, আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানিতে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এই ঐক্যই আমাদের শক্তি। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষায় আলেম-ওলামা, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, পীর-মাশায়েখ ও সাধারণ দেশপ্রেমিক জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

পরে তিনি হাটহাজারী মাদরাসা প্রাঙ্গণে সমাহিত চার জন প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা আহমদ শফি (রহ.), হযরত মাওলানা জোনায়েদ বাবুনগরী (রহ.), হযরত মাওলানা ক্বারী ইলিয়াস (রহ.) ও হযরত মাওলানা ইয়াহইয়া (রহ.) এর কবর জিয়ারত করেন এবং তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করেন।

এছাড়া স্থানীয় এক বাসিন্দার আমন্ত্রণে তিনি তাঁর বাসায় চা-চক্রে অংশগ্রহণ করেন। চা-আড্ডায় তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, জাতীয় রাজনীতি, আগামী সংসদ নির্বাচন এবং ১৯৯১ সালের তাঁর প্রথম নির্বাচনী বিজয় ও অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

এরপর তিনি বাসার সামনের স্থানীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে তিনি তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের উদ্দেশে রওনা হন।

উল্লেখ্য, শাহজাহান চৌধুরী ১৯৯১ ও ২০০১ সালে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ওই এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানান।

এই সফরের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল হৃদয়ছোঁয়া ও অন্তরঙ্গতায় ভরা-আলেম-ওলামার ভালোবাসা, সাধারণ মানুষের সম্মান, এবং দেশ ও ইসলামের ভবিষ্যৎ নিয়ে একজন রাজনীতিকের দায়বদ্ধতার স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ।