জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘকাল ধরে দেশের যথাযথ অগ্রগতি হয়নি। এর পিছনে সততা ও জবাবদিহিতার অভাব ছিল। আজ জনগণ যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামীকে বাছাই করেছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে জামায়াতের ৫ দফা দাবি আজ জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। দেশ পরিচালনায় শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। ৫ দফা গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে শিক্ষক সমাজকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। বৃহস্পতিবার কেরানীহাটে শিক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল মাওলানা বদরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমীর জননেতা আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল ফয়েজ।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপাল হারুনুর রশিদ (আল হেলাল ডিগ্রী কলেজ), প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল আলম (বাজালিয়া মাদরাসা), প্রিন্সিপাল মাওলানা মুনিরুল আলম (সাতকানিয়া আলীয়া মাদরাসা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আনোয়ারুল আজিম (গারাংগিয়া মাদরাসা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল বশর (হাছনদন্ডী মাদরাসা), প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রশিদ আল কাদেরী (ছৈয়দাবাদ দুদু ফকির মাদরাসা), কেরানীহাট মাদরাসার প্রিন্সিপাল, গাটিয়াডেংগা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,আলী আহমদ প্রানহরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, হাছনদন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরও অনেকে। এছাড়াও শতাধিক কলেজ, মাদরাসার প্রধান ও প্রভাষকগণ এবং স্কুল প্রধান ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আমীর বলেন, জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে হলে জুলাই সনদকে আইনী মর্যাদা দিতে হবে। ৩০/৩৫ ভাগ ভোট পেয়ে ফ্যাসিস্ট হওয়ার আশঙ্কা রোধ করতে সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক হার তথা পিআর সিস্টেমে নির্বাচন দিতে হবে। লুটেরা ও খুনিদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। সকল দলের জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নামে বেনামে পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
উত্তর সাতকানিয়া সাংগু থানার আমীর মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা মজলিসে শুরা সদস্য ডাঃ আব্দুল জলিল, সাতকানিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা কামাল উদ্দীন, চন্দনাইশ উপজেলা আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দিন, সাতকানিয়া পৌরসভা আমীর হামিদ উদ্দিন আজাদ, উত্তর সাতকানিয়া সাংগু থানার নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সাতকানিয়া উপজেলা সেক্রেটারি তারেক হোসাইন, চন্দনাইশ উপজেলা সেক্রেটারি আহসান সাদেক পারভেজ, উত্তর সাতকানিয়া সাংগু থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইলিয়াছ, কেরানীহাট শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল মালেক প্রমূখ।
ওলামা মাশায়েখগণের ত্যাগ-কুরবানি স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম ১৫ আসন সংসদ সদস্য মনোনীত পদপ্রার্থী মজলুম জননেতা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ইতিহাসে ওলামায়ে কিরামগণ জুলুমের বিরুদ্ধে, পরাধীনতার বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, পাকিস্তানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল স্বাধীনতা আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ওলামা -মাশায়েখের ভূমিকা ইতিহাসের অবিচ্ছিন্ন অংশ। চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানেও মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ শতাধিক আলেম শাহাদাত বরণ করেছেন, পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করেছেন। ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে, জুলুমের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে ওয়াজ- নসিহত ও জুমায় খুতবা দেয়ার কারণে অনেকে চাকুরি হারিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার অসংখ্য আলেম অপদস্ত হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেন, চাকুরিচ্যুত হয়েছেন এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ ওলামা মাশায়েখগণের ত্যাগ কুরবানি স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। জামায়াতের ৫ দফা গণদাবি আদায়ে সোচ্চার হোন।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজমহল কমিউনিটি সেন্টারে ৫ দফা গণদাবী আদায়ের লক্ষ্যে ওলামা-মাশায়েখদের সাথে লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদীর সভাপতিত্বে সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আ.ন. ম নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আমীর জনাব আনোয়ারুল আলম চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমীর ড. হেলাল উদ্দিন মোহাম্মদ নোমান। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সহসভাপতি নুরুল আলম তালুকদার, হেফাজতে ইসলাম লোহাগাড়া উপজেলার সহসভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন হেলালী, আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু মুসা মুহাম্মদ খালেদ জামীল, চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শাহে আলম এবং বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক ও মসজিদে খতিব সহ ওলামা নেতৃবৃন্দ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আমীর বলেন, জুলাই বিপ্লবকে টেকসই করতে হলে প্রভিশনাল সাংবিধানিক আদেশে জুলাই সনদকে আইনী মর্যাদা দিতে হবে। নামে বেনামে পতিত স্বৈরাচারের পুনর্বাসন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে স্বৈরাচারের দোসর ‘ওলামায়ে সূ’ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ৩০/৩৫ ভাগ ভোট পেয়ে ফ্যাসিস্ট হওয়ার আশঙ্কা রোধ করতে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক হার তথা পিআর সিস্টেমে নির্বাচন দিতে হবে। লুটেরা ও খুনিদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে এবং সকল দলের জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আবু তাহের, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা সলিমুল্লাহ সেলিম, অধ্যাপক জালাল আহমদ, সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক মুহাম্মদ হাসান সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ।