বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করতেই আমরা সবার সাথে আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছিলাম। এখন যে সংষ্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেটি আমরা অনেক আগেই দিয়েছি। তবে সবার আগে ভাবতে হবে, রাজনীতিক দল হিসেবে আমরা যা চাচ্ছি সেটির তুলনায় সাধারণ মানুষ সেখান থেকে কি পাচ্ছে। সবার আগে দেশের জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। গতকাল সোমবার এক ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে ছিলাম, এক সাথে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলাম, মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরা সংগ্রামে ছিলাম.. কাজ করেছিলাম, সেই সকল দল একসাথে বসে আলোচনা করে আমরা প্রায় দুই আড়াই বছর আগে উপস্থাপন করেছিলাম ৩১ দফা জাতির সামনে। কেনো ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিলাম? কারণ একটিই। আমরা দেখছিলাম পলাতক যে স্বৈরাচার তারা কিভাবে দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান, যেকেনো প্রতিষ্ঠানের কথা আমরা উল্লেখ করতে পারি, সেটি শিক্ষা ব্যবস্থা হতে পারে, সেটি মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হতে পারে, সেটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে, সেটি বিচার ব্যবস্থা হতে পারে, সেটি সিভিল এডমিনিস্ট্রেশন হতে পারে, সেটি পুলিশ এডমিনিস্ট্রেশন হতে পারে, বিদ্যুৎ সেক্টর হতে পারেÑ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছিলো তারা।

তারেক রহমান বলেন, সবচেয়ে প্রথমেই যেটি ধ্বংস করেছিলো সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বিতর্কিত এবং ধ্বংস করে দিয়েছিলো। তিনি বলেন, যে দলটি রাজনৈতিক দলগুলোকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সংগ্রামে ছিলো, আমরা সকলে বিশ্বাস করি যেসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল সেসব প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদেরকে মেরামত করতে হবে। যেহেতু আমাদের রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশকে ঘিরে, বাংলাদেশের জনগণকে ঘিরে আমাদের রাজনীতির বড় পূঁজি হচ্ছে এই দেশের জনগণ। কাজেই এই রাষ্ট্রের কাঠামো যদি আমরা মেরামত না করি, দেশের মানুষের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারব না, মানুষের প্রত্যাশা অনুয়ায়ী গড়ে তুলতে পারব না।

পুরানা পল্টনে একটি হোটেলে জাতীয়তাবাদী সমমনা দলের উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

তারেক রহমান বলেন, আজকে অনেক ব্যক্তি সংস্কার নিয়ে অনেক কথা বলছেন। কিন্তু বাংলাদেশে সংস্কার প্রয়োজন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোর যে সংস্কার প্রয়োজন, রাষ্ট্র মেরামতের যে সংস্কার প্রয়োজন এটা সবচেয়ে আগে আমরাই বলেছিলাম। আমার কাছে সংস্কার বলুন, রাজনীতি বলুন কি বুঝি? ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের সময়ে একটি টক শোতে তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যেকার আলোচনার বিষয়বস্ত রোগীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স কোন রাজনৈতিক দল দ্রুত নিয়ে যেতে পারবে তার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে তারেক বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের যদি সুযোগ থাকে কে দেশ পরিচালনা করবে তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো জনগনের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে হবে, জন-আকাক্সক্ষাগুলো নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা করতে হবে। জনগণের বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের অŸশ্যই চিন্তাভাবনা করা উচিত। জনগণই আমাদের রাজনীতির বড় পূঁজি।

জাতীয়তাবাদী সমমনা দলের সমন্বয়ক এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা ও এসএম সাহাদাত সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, মাহাদী আমিন, জামায়াতে ইসলামীর মো. কামাল হোসেন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাগপার খন্দকার লুৎফুর রহমান, গণঅধিকারের ফারুক হাসান, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী, মুসলিম লীগের নাসিম খান, ডিএলের খোকন চন্দ্র দাশ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।