স্বৈরাচার পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জুলাইয়ের করুণ চিত্র ধারণ করে মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার প্রত্যয়ে আজকের দিন পালিত হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট, খুনি, গুমকারী ও পাচারকারী নির্লজ্জভাবে পালিয়েছে; আজকে তার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ। নির্মম স্বৈরাচার উৎখাতে যে ছাত্র জনতা জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে লড়াই করেছে, আহত হয়েছে, শাহাদাৎবরণ করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই । আবু সাইদ, মুগ্ধের স্মৃতি ও ইতিহাস এখনো অম্লান। তারাসহ সকল শহীদের জন্য জান্নাতে উচ্চমর্যাদা কামনা করি। যারা চোখ হারিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, আহত হয়ে কাতরাচ্ছে তাদের সুস্থ্যতার জন্য দোয়া করি।
মঙ্গলবার ( ৫ আগষ্ট) বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতেয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ
গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, তাদের ত্যাগের প্রধান ও মূল লক্ষ্য ছিলো দেশে যেনো আর কোন খুনি, ফ্যাসিষ্ট ও অর্থ পাচারকারী তৈরি না হয়। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় দেশে চাঁদাবাজী, খুনি ও তাবেদার এখনো বিদ্যমান। আমি ঘৃণা জানাই সেইসব চাঁদাবাজ, খুনি ও তাবেদারদের প্রতি। বাংলার জমীন থেকে এই চাঁদাবাজ, খুনি ও তাবেদারদের উৎখাত করতেই হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, যারা চাঁদাবাজী করছেন, যারা বিদেশের ইচ্ছাপূরণে কাজ করছেন সেই ঘৃন্য শত্রুদের সতর্ক করছি। দেশে অনেক মেধাবীরা জীবন দিয়েছে, অনেক মা-বোন সংগ্রাম করেছে। তারপরেও দেশে কোন চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী ও তাবেদারী সহ্য করা হবে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, যে উদ্দেশ্য ও চেতনাকে ধারণ করে জুলাইয়ে রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করা হয়েছে তা পূরণ হয় নাই। যে অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতা লড়াই করেছে তা দেশের ক্ষমতাপ্রেমিদের মধ্যে এখনো বিদ্যমান। তাই আমাদের যুদ্ধ শেষ হয় নাই। আমরা রাজপথও ছাড়ি নাই। দেশ কারো কাছে ইজারা দেয়া হয় নাই। দেশ কোন মগের মুল্লুক না। ফলে কাউকেই যা ইচ্ছা তার করতে দেয়া হবে না।
পীর সাহেব চরমোনাই প্রত্যয় নিয়ে বলেন, এই দেশ আমাদের। এই দেশ গড়ার দায়িত্বও আমাদের। তাই গত জুলাইয়ের প্রত্যয়ে নতুন করে কোন চাদাঁবাজ, সন্ত্রাস ও তাবেদারকে মাথা উচু করতে দেয়া হবে না। তাই যারা জীবন দিয়েছে, চক্ষু হারিয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে তাদের স্বপ্ন পূরণ সবাই মিলে দেশ থেকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসকে চিরতরে উঃখাতে কাজ করে যেতে হবে। গত ৫ আগস্ট নতুন সম্ভবনা তৈরি করেছে। এটাকে নষ্ট করা যাবে না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের সকল নাগরিকের মতামতকে মূল্যায়ন করে জাতীয় সরকার গঠন করে দেশকে সুন্দর করতে চাই।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাসির আহমাদ প্রমুখ।