আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন মিলে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে একটি জোট গঠন করেছে। জোটটির মূল দাবি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।
মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে একটি সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
জোটটিতে ঐক্যবদ্ধ সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, একতার বাংলাদেশ, রক্তিম জুলাই, স্টুডেন্ট রাইট ওয়াচ ইত্যাদি। এ রকম মোট ৩৫টি সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ জোটে সংহতি প্রকাশ করে জোটবদ্ধ হয়েছে বলে জানান জোটটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে জোটটির অন্যতম সংগঠক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের অপশাসন শেষ হয়। পরে আমরা আশায় বুক পেতে ছিলাম, নতুন বাংলাদেশে কোনও বৈষম্য থাকবে না, আমরা পরিবর্তন দেখতে পারবো। কিন্তু এতো বড় অভ্যুত্থানের পরও আমরা কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন দেখিনি। জুলাই অভ্যুত্থানে যে দল আমাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, আমরা এখনও তাদের বিচারের আওতায় আনতে পারিনি। তাদের মধ্যে অনেকেই দেখি প্রকাশ্যে মিছিল করছে। অথচ আমাদের আহত ভাইয়েরা হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে বিভিন্ন মতাদর্শের লোক আছি। আমরা এতদিন স্বতন্ত্রভাবে আমাদের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু এখন থেকে আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একসঙ্গে কাজ করবো।’
লিখিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা দেখছি গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া এখনও অনিশ্চিত। সব থেকে বড় উদ্বেগের বিষয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো নিয়ে আজ জুলাই ঐক্য নামে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় জোটের ঘোষণা করছি।’
মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, এই জোটের মূল ও একমাত্র দাবি, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং ২৪ এর গণহত্যা, শাপলা ট্রাজেডি, পিলখানা ট্রাজেডি, গুম-খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপকর্ম সংঘঠিত হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় ক্যাম্পেইন জারি রাখা। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট ধারণকারী সব শক্তিকে নিয়ে একতাবদ্ধভাবে কাজ করবে আমাদের এই জোট।’
সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আগামী ৭ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।