বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, দেশের মানুষ এমন এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে থাকবে না কোনো অন্যায়, অনাচার, দখল, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণের মতো কদাচার। যে বাংলাদেশে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকে স্ব স্ব অধিকার ভোগ করবে। সকল মানুষের অধিকার, মর্যাদা, নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে পারে কেবলমাত্র ইসলাম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন এক কল্যাণময় শান্তি-স্বস্তির বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে।

গতকাল জুমাবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার তারাবো পৌর অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর মুহাম্মদ মমিনুল হক সরকারের সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সদস্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন মোল্লা প্রমুখ।

মাওলানা আবদুল হালিম আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে পিষ্ট জনগণ আওয়ামী জুলুম-নিপীড়ন থেকে মুক্তি পেতে যে ত্যাগ কুরবানি করেছে তা বর্ণনাতীত। আওয়ামী লীগ তাদের দুঃশাসনের মাধ্যমে গণ-দুশমনে পরিণত হয়ে তাদের আদি ঠিকানা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের সতেরো বছরে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের লক্ষাধিক নেতাকর্মী দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেছে। ৫ জনকে বিচারের প্রহসন করে এবং ৬ জনকে কারাগারে বন্দী রেখে জামায়াতে ইসলামীর মোট ১১ জন শীর্ষ নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। কয়েক শত নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়ে অন্ধ, শ্রবণ শক্তিহীন হওয়া, পঙ্গুত্বের জীবন-যাপন করছে পাঁচ হাজার নেতা কর্মী। এত জুলুম নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামীকে নত করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্ত যারা নিষিদ্ধ করেছিল তারাই আজ দেশ থেকে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।

প্রধান অতিথি বলেন, জনগণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়, তাই ঘোষিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে।

সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে ঘটে যাওয়া গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র প্রকাশ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন করতে হবে। প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সব দাবি আদায়ে তিনি সকলকে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, নারায়ণগঞ্জ ছিল গড ফাদার, সন্ত্রাস, খুন, দখল আর চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য। আগামীতে নারায়ণগঞ্জে নতুন কোনো গডফাদার, দখলবাজ, চাঁদাবাজকে মেনে নেওয়া হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে মমিনুল হক সরকার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রুকনগণকে কুরআন সুন্নাহর আলোকে নিজেদের ব্যক্তি চরিত্র গঠনের পাশাপাশি একটি কল্যাণময় সমাজ গঠনে সর্বোচ্চ ত্যাগ-কুরবানী করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে ইসলামী আন্দোলনে ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।