‘সদ্য এবি পার্টি ত্যাগ করেছি। আবার আল্লাহর নাম নিয়ে জামায়াতে এলাম। আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন’। নিজের ফেসবুকে ফেইজে এভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে জামায়াতে ইসলামীতে ফিরে আসার ঘোষণা দিলেন সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী।

নিজের ফেসবুক ফেইজে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘আমি ১৯৬৪ সালের মাঝামাঝি নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় ইসলামী ছাত্রসংঘে যোগদান করি। এস এস সি পরীক্ষার পর সাথী হিসেবে শপথ গ্রহণ করি। চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে থাকাকালীন ১৯৬৭ সালে ইসলামী ছাত্রসংঘের রোকনিয়াতের শপথ গ্রহণ করি। কিছু দিন পর অভাব অনটনে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িতে এসে ১৯৬৮ সালে ভোলৈন উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পাই। কিছু দিন পর লক্ষণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পাই। উচ্চমাধ্যমিক প্রাইভেট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বোর্ডে রেজিস্ট্রেশন করাই। তিনি আরও লিখেন, সংগঠনের সিদ্ধান্তে লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট,লালমাই চৌদ্দগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতী কাজ শুরু করি। বাইশগাঁও গ্রাম নিবাসী শহীদ মাওলানা নুরুল হুদা সাহেবকে মুরুব্বি হিসেবে পাই। বাতাচো নিবাসী মাওলানা আহমদ উল্লাহ সাহেব মাঝে মাঝে কুমিল্লা থেকে এসে আমাদের কাজের খবর নিতেন। কিছু দিনের মধ্যেই বানঘরের মাওলানা আব্দুল গণি এবং অধ্যাপক সোলায়মান সাহেবকে পাই।

তিনি আরও লিখেছেন, ১৯৭০ সালের মধ্যে আমাদের জনশক্তি প্রায় ৪০ জনে উন্নীত হয় এই বিশাল এলাকাজুড়ে। শুরু হয় ইসলাম বিরোধী শক্তির সঙ্গে লড়াই। তার অংশ হিসেবে এই এলাকায় ইসলামী আন্দোলন চিরতরে খতম করে দেওয়ার জন্য ১৯৭০ সালের আগস্ট মাসে লক্ষণপুর বাজারে হিংস্র হায়েনার দল আমাদের উপর ব্যাপক আক্রমণ চালায়। আমরা অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে অনেকদিন চিকিৎসা গ্রহণ করি। আমাকে লক্ষণপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়। ১৯৭১সালে আমি চট্টগ্রাম চলে যাই। কিবরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পাই। ১৯৭২ সালে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করি। গোপনে চলতে থাকে ইসলামী আন্দোলনের কাজ। ১৯৭২সালে আকবরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আমার ভাই আবদুর রব সাহেব (পরবর্তী কুমিল্লা জেলা আমীর)কে শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করি। চলতে থাকে গোপনে ইসলামী আন্দোলন। ১৯৭৫ সালে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে বি এ পাশ করি। ছাত্র জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭৫ অক্টোবর মাসে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ এ যোগদান করি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ১৯৭৬ জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে রোকনিয়াতের শপথ গ্রহণ করি। ঐ বছর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের কাজ করতে থাকি এবং বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে সহকারী কমিশনার পদে যোগদান করি। ২০০৭ সালে সরকারি চাকরি হতে অবসর নিয়ে পূণরায় জামায়াতে যোগদান করি। ২০১৯ সালে পদত্যাগ করে আমার বাংলাদেশ পার্টি গঠন করি। সদ্য এবি পার্টি ত্যাগ করেছি। আবার আল্লাহর নাম নিয়ে জামায়াতে এলাম। আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন’।

এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী ফেনীতে জেলা প্রশাসক থাকা অবস্থায় জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক আলোচিত হন। পরে সংস্থাপন সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কুমিল্লার লাকসাম থেকে জামায়াত তাকে তাদের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করে।