আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, মিডিয়ায় আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে বিএনপি বলেছিল নিষিদ্ধের বিষয়টা, কাকে গ্রহণ করবে বা করবে না এটা জনগণের বিষয়। এটা কোন অবস্থাতেই আইন আদালত অথবা সরকারি সিদ্ধান্তে যে করার যে প্রক্রিয়া, এটার সাথে বিএনপি সবসময় দ্বিমত পোষণ করেছিল। বিএনপি বলেছিল জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আজহার-শফিক’ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ডা. জাহিদ বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে কোন অবস্থাতে গণহত্যাকারী এবং গণদুশমন যারা ছিল, যারা গুম করেছে, যারা মানুষকে নির্বিচারে গুলী করে হত্যা করেছে, যারা মানুষের সম্পদ লুন্ঠন করে বিদেশে নিয়ে পাহাড় গড়েছে তাদেরকে বিচার এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি, আয়না ঘর, গুম, এনকাউন্টার বলেন এবং অট্টহাসি অর্থাৎ প্রতিহিংসা পরায়ণতার যে চরমপরাকাষ্ঠা উনারা দেখিয়েছেন এর বিরুদ্ধে বিএনপি সবসময় সোচ্চার এবং আমরা মনে করি, তারা গণদুশমন। তাদের(আওয়ামী লীগ) বিচার ছাড়া বা তাদের অনুশোচনা ছাড়া আজকে যদি আমরা একাত্তর নিয়ে এত কথা বলি। তাহলে এই ’২৪ এ গত ১৫ বছরে দেশের ভোটাধিকার চুরি, দিনের ভোট রাতে করেছে তার জন্য তাদের অনুশোচনা হবে না, এটা তো হতে পারে না। তাদেরকে অবশ্যই আনকন্ডিশনালি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে যেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে ক্ষমা করবে কি করবে না। এটি ব্যক্তিগতভাবে কারো করার বিষয় আছে বলে আমি মনে করি না।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, যেকেনো সময়ে তাদের নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে সেক্ষেত্রে বিএনপি ভীত কিনা জানতে চাইলে জাহিদ বলেন, বিএনপি এবং গণতন্ত্রকাগামী শক্তির যে ঐক্য হয়েছে এই ঐক্য কোন অবস্থাতেই ভয়ে ভীত হলে ৫ আগস্ট উনি(শেখ হাসিনা) পালাতেন না। উনি যদি সত্যিকার অর্থে রাজনীতিবিদ হতেন তাহলে মাঠে থেকে রাজনীতি মোকাবেলা করতেন। কি হতো? যা হওয়ার সেটা হতো, জেলখানায় যেতেন। আমরা ৯০ এ স্বৈরাচারের পতন দেখি নাই। ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা দেখেছি স্বৈরাচার জেলখানায় গিয়েছে। কাজেই সেই ক্ষেত্রে উনি রাজনীতিবিদ হিসেবে যেটা করেছেন, যে অন্যায় করেছে, যে অন্যায়কারী তার মনের যে দুর্বলতা সেটা উনি প্রকাশ করেছেন। তাদের নিয়ে আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তারা মোটেই ভীত বা সন্ত্রস্ত নই, জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের অনেক মানুষের বাসায় কোমর এবং হাঁটু পর্যন্ত পানি, অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে, সার্ভিস টোটালি ডিজরাপ্টেড হয়েছে। এটি কি আগে হতো? আমরা সবসময় বলি ড্রেনেজ সিস্টেম, ইয়েস ড্রেনেজ সিস্টেম ইজ এ প্রবলেম, আমাদের হেবিট ইজ এ প্রবলেম। সবসময় আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে হোয়াট ইজ বেস্ট ফর টুডে হোয়াট ইজ বেস্ট ফর নেক্সট ডে এবং এই সমাজটা খালি শুধু আমার না এই সমাজটা আমাদের। এই আমাদের চিন্তাভাবনা যদি না আসে তাহলে আপনি ইনক্লুসিভনেস থাকবে না। আর ইনক্লুসিভনেস যদি আপনার মধ্যে না থাকে তাহলে আপনি কিছুদিনের জন্য চলতে পারেন, সাস্টেইনেবল হবেন না। সাস্টেইনেবল হইতে হলে আপনাকে ইনক্লুসিভনেস আনতে হবে।
‘আজহার-শফিক ফাউন্ডেশন’ এর সভাপতি একেএম শামসুল ইসলাম রঞ্জুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তরা বক্তব্য রাখেন।